খুলনায় অধিকার’র মানববন্ধনে বক্তারা :দেশের সকল আয়নাঘর ভেঙ্গে গুমেরশিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনতে হবে
প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ অবিলম্বে দেশের সকল আয়নাঘর ভেঙ্গে গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনতে হবে। একই সঙ্গে কথিত আয়নাঘর বা বন্দীশালার সঙ্গে জড়িত মানবাধিকার লঙ্ঘণকারীদের মানবতাবিরোধী অপরাধ আইনে বিচার করতে হবে। ফ্যাসিবাদের রক্ষক বিদ্যমান সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। বিচার ব্যবস্থা ও নির্বাচন কাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে। ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করে জণগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
গুমের শিকার ব্যক্তিদের মুক্ত করা এবং গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডসহ সকল মানবাধিকার লঙ্ঘণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবিতে বৃহস্পতিবার (০৮ আগষ্ট) খুলনায় আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। দেশের শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’র আয়োজনে বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সভাপতিত্ব করেন অধিকার খুলনার ফোকাল পার্সন মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুজ্জামান।
বক্তারা আরও বলেন, মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ গত দু’ যুগেরও বেশি সময় ধরে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডসহ সকল মানবাধিকার লঙ্ঘণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। যে কারণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদী সরকার অধিকারকে রূখে দিতে সব ধরণের বল প্রয়োগ করে। বিশেষ করে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের ম্যাচাকারের পর একমাত্র অধিকারই তথ্য প্রমাণসহ নিহত কয়েকজনের তালিকা প্রকাশ করে। তাতেই সরকার অধিকারের পরিচালক নাসির উদ্দিন এলান এবং সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দু’ বছরের স্জাা দেয়। এভাবে একের পর এক দমন-পীড়ন, গণতন্ত্র ও বিচার ব্যবস্থা দলীয়করণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘণের মাধ্যমে চরম সীমায় পৌঁছায়। যার ফলে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারকে হটিয়ে বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা-ভাংচুরের নিন্দা জানিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় সতর্ক থাকার আহবানও জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।
কর্মসূচীতে বক্তৃতা করেন নারী নেত্রী রেহানা আখতার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) সহকারী মহাসচিব এহতেশামুল হক শাওন, খুলনা মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের (এমউজে) কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক রানা, নাগরিক নেতা শেখ আব্দুল হালিম, অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ, ছায়াবৃক্ষের প্রধান নির্বাহী মাহবুব আলম বাদশা, ছাত্রনেতা শহিদুল ইসলাম, মানবাধিকার কর্মী ইসমত আরা কাকন, সিটি কলেজের ছাত্র তুষার মাহমুদ এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী কেএম জিয়াউস সাদাত।
উপস্থিত ছিলেন বাংলাভিশনের খুলনা বিভাগীয় প্রধান আতিয়ার পারভেজ, অ্যাডভোকেট এটি এম মনিরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট ও মানবাধিকার কর্মী মো. শহিদুল ইসলাম, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক এম এ আজিম, প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম, শিক্ষিকা রোজিনা আক্তার, সাংবাদিক হারুনর রশীদ, মো. আবুল হাসান শেখ, মো. আমিরুল ইসলাম, মিশারুল ইসলাম মনির, মানবাধিকার কর্মী হাফেজ মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান, মুফতি সেফায়েত উল্লাহ, নাদিম হোসেন, রুহুল আমিন, জি এম রাসেল ইসলাম, ফাতেমা রশিদ, আরিফা আশরাফী চুমকি, ব্যবসায়ী মো. কামাল খান, জিএম মঈন উদ্দিন, মো. বাবুল হাওলাদার, মো. আরমান, সাংবাদিক মো. সহিদুর রহমান, হাসানুজ্জামান মনি, সরকারি মডেল কলেজের ছাত্রী তামান্না ইয়াসমিন তিসা, সিটি কলেজের ছাত্রী ফাহমিদা আক্তার তিশা, ইকবাল নগর স্কুলের ছাত্রী নাফিজা হাসান, কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্রী লাবিবা মুক্তাদির, হাজী আব্দুল মালেক কলেজের ছাত্রী নুসরাত জাহান, সিটি কলেজের ছাত্রী পুজা সরকার, পাইওনিয়ার কলেজের আবিদা ইসলাম, বিএন কলেজের ছাত্র মেহেদী হাসান, তাহসিন আহমেদ অমি, সাজিদ আহমেদ, সুন্দরবন কলেজের ছাত্র শাফিন বিন তমিজ, ফাতিন ইসরাক, সিফাত রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, গুম মানবতা বিরোধী একটি অপরাধ। রাষ্ট্র চাইলেই গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘণের ঘটনা বন্ধ হয়ে যাবে। বক্তারা এখনই গুম বন্ধ এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের তাদের স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহবান জানান।
তারা বলেন, গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্ত্রী-সন্তানরা আর্থিক ও সামাজিকভাবে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে চরম কষ্টে রয়েছেন। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চা এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।