দাকোপ প্রতিনিধিঃ সমালোচনা আর বিতর্ককে সঙ্গি করে অবশেষে দাকোপ ছাড়লেন আলোচীত ইউএনও জয়দেব চক্রবর্তী। ছাত্র জনতার আন্দোলন নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে তিনি পড়ে যান বিপাকে।
নির্বাহী অফিসারের চেয়ারে বসে প্রকাশ্যে নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ছাত্র লীগের এক সময়ের ক্যাডার দাবী করে আলোচনা সমালোচনায় আসা ইউএনও জয়দেব চক্রবর্তী চরম বিতর্ককে সঙ্গি করে অবশেষে দাকোপ থেকে বিদায় নিলেন। অধীনস্থ কর্মকর্তা কর্মচারী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক, সুশীল সমাজ, এনজিও কর্মি এবং শিক্ষক সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করে প্রকাশ্যে অসম্মানজনক আচারনে তিনি অভ্যস্ত ছিলেন। সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন এই কর্মকর্তা ওয়াজ মাহফিলকে মনে করতেন বিরক্তিকর শব্দ দূষণের বিষয়। আলেম সমাজকে মৌলবাদ জঙ্গিবাদের জনক হিসাবে গন্য করতেন। শহীদ জিয়ার ব্যবহ্নত চশমাকে খুনী জিয়ার প্রতিক হিসাবে ঘৃণাকারী এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দূর্ণীতি অনিয়ম আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ বাণিজ্যের বিস্তর অভিযোগ ছিলো দায়িত্বের পুরোটা সময়। সরকারী হাট ঘাট অর্থের বিনিময়ে খাস ইজারার নামে নিজের মনোনীত ব্যক্তিদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ছিলো। বিভিন্ন স্কুল কলেজের নিয়োগে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। সরকারী বেসরকারী ত্রান বিতরনের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ত্রানের একটি অংশ তার বাসভবনে পৌছে দিতে হতো। ভারত প্রীতি প্রকাশে তিনি ছিলেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বিএসএফ’র হাতে সীমান্তে মানুষ হত্যার বিষয়টিকে সমর্থন করে তিনি মন্তব্য করতেন “মানুষ নয়, সীমান্তে ভারত যাদের হত্যা করে তারা চোর”। দেশে চলমান ছাত্র আন্দোলনের সময় দাকোপ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তাদের কোটা বহালের দাবীতে নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে স্বারকলীপি দিতে গেলে তাদের সাথে খোলা মেলা আলোচনায় তিনি বলেন, যে ছাত্র সমাজ নিজেদেরকে রাজাকার দাবী করে শ্লোগান দেয় তারা আসলেই রাজাকারের প্রজন্ম পাকিস্তানের প্রেতাত্না। সরকার পতনের আগেরদিন ৪ আগষ্ট তিনি উপজেলা সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে এক সভা করেন। সভায় ৪ নং কৈলাশগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিহির মন্ডল তার বক্তৃতার এক পর্যায়ে দাকোপের মাটিতে কেউ আন্দোলন করতে নামলে আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি তাকে পিটিয়ে মারা হবে, আপনারা কথা দেন এ ব্যাপারে কোন হত্যা মামলা নেবেন না ? প্রতি উত্তরে নির্বাহী অফিসার জয়দেব চক্রবর্তী মিহির মন্ডলকে সাহসী বক্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি এমন বক্তব্য শুনতে চাচ্ছি। সরকার পতনের পর বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ায় তার এ সকল অপকর্ম ভাইরাল হলে আতংকে তিনি দাকোপ ত্যাগ করে গাঁ ঢাকা দেন। তার বিদায়ে দাকোপবাসীর মাঝে স্বস্থি ফিরে এসেছে। তিনি যশোরের অভয়নগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার হিসাবে যোগদান করেছেন বলে যানা গেছে।