অব্যাহত নদী ভাঙনে সঙ্কুচিত হচ্ছে বটিয়াঘাটার ভৌগলিক মানচিত্র

প্রকাশঃ ২০২১-০৩-০১ - ১২:৩৩

খুলনা অফিস : অব্যাহত নদী ভাঙনে গোটা বটিয়াঘাটা সঙ্কুচিত হয়ে চলেছে। বছরের পর বছর এ নদী ভাঙন নদীর কূলবর্তী মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে গৃহহারা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ভাঙন রোধে কার্যত দীর্ঘমেয়াদী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় গৃহহারা মানুষের যেমন বেড়েছে ক্ষোভ, তেমনি এখনও যারা টিকে আছে তাদের মাঝে বেড়েছে আতঙ্ক।
সূত্রে প্রকাশ, দক্ষিণ খুলনার সুন্দরবন উপকূলবর্তী এ উপজেলা নদী দ্বারা বেষ্টিত। উপজেলার অন্যতম নদ-নদরি মধ্যে কাজিবাছা, ঝপঝপিয়া, মাঙ্গা, ভদ্রা, শৈলমারী নদী উল্লেকযোগ্য। গত ৩/৪ বছর যাবৎ নদ-নদীগুলোর অব্যাহত ভাঙনে নদীর উপকূলবর্তী বসতিরা ভিটেমাটি হারিয়ে গৃহহারা হয়ে চলেছে। পৈত্রিক ভিটেমাটি হারিয়ে অনেকেই আজ নিঃস্ব। ইতিপূর্বে ভদ্রা নদীর ভাঙনে বারোআড়িয়া বাজার ও বারোআড়িয়া গ্রামের আশিংক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানে ঐ এলাকার পুলিশ ক্যাম্প, মসজিদ, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মন্দির এবং পাউবোর অফিস বাঙনের পথে। দুইশত পরিবার ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে। তা ছাড়াও পাশ্ববর্তী ধানের গোডাউন ও অনেক সরকারি স্থাপনাও চরম হুমকির মুখে। অপরদিকে কাজিবাছা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে বিগত ৫/৬ বছর ধরে শত শত পরিবার গৃহহারা হয়েছে। মাঝখানে জিও টেক্সটাইলের মাধ্যমে খানিকটা ব্লক বসিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হলেও বর্তমানে ঐ স্থানের ব্লকগুলো সরে গিয়ে গোটা উপজেলা বাজার সদরের বেড়িবাঁধ চরম হুমকির মুখে পড়েছে। পুুরাতন ফেরীঘাট এলাকায় সম্প্রতি বড় ধরনের একটি ভাঙন দেখা দেওয়ায় বাজার সদর ও তার আশপাশ এলাকার ১০/১৫ টি গ্রামের মানুষ রয়েছে ভাঙনের আতঙ্কে। চলমান অমাবস্যার গোন থাকায় বর্তমানে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মাঝে এ আতঙ্ক বিরাজ করছে। আগামী পূর্নিমার গোনে কখন না জানি আঘাত আসে। ঐ একই অবস্থা পানখালী ফেরীঘাট, বরণপাড়া মোড়ে। উপজেলার ৩০ নং পোল্ডারের বরইতলা নামক স্থানো প্রায় দেড় কিলোমিটার বেড়িবাঁধের অবস্থা চরম ঝুঁটিপূর্ণ। ইতোমধ্যেই উক্ত স্থানের খুলনা-চালনা মহাসড়কের তলদেশের দুই তৃতীয়াংশ মাটি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যে কোন মুহুর্তে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে কিসমত ফুলতলা, দেবীতলা, বাদামতলা, ফুলতলা, হেতালবুনিয়া, বসুরাবাদসহ ৯টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে কাজিবাছা নদীর উপকূলবর্তী বেড়িবাঁধসমূহ চরম হুমকির ভেতরে রয়েছে। এতে দুই উপজেলা দাকোপ ও বটিয়াঘাটার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন হয়ে পড়বে বলে এলাকাবাসীর অভিমত। দীর্ঘদিন যাবৎ অব্যাহতভাবে এ নদী ভাঙন কুরে কুরে মানুষকে সর্বস্বান্ত করে দিয়ে এবং প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাতে বাধ্য করলেও পাউবোর পক্ষ থেকে তেমন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। সে কারণে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের মনে ক্ষোভের দানা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আশরাফুল আলম খাঁন এ প্রতিনিধি কে জানান, এভাবে যদি ভাঙন অব্যাহত থাকে তবে বটিয়াঘাটা উপজেলা অনেক ছোট হয়ে যাবে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আলাপ আলোচনা হয়েছে অচীরেই এ ভাঙন কবলিত এলাকার সমস্যার সমাধান করা হবে। এ ব্যাপারে, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ ব্যানার্জী এ প্রতিনিধিকে মুঠোফোনে জানান, বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙনের যে ভাঙন দেখা দিয়েছে তা অচীরেই বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।, সদর রক্ষা বাঁধ ও ভাঙন কবলিত স্থান রক্ষার জন্য স্কিম পাঠানো হয়েছে। স্কিম পাস হলে কাজে হাত দেওয়া হবে।