ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্র-ছিনতাইকারী তৎপর : প্রতিরোধে কেএমপি’র গোয়েন্দা টিম মাঠে

প্রকাশঃ ২০১৯-০৮-০৪ - ১২:০২

কামরুল হোসেন মনি : ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবছর বেড়ে যায় মৌসুমী অপরাধীদের তৎপরতা। খুলনা নগরীতে প্রতারণার ফাঁদ পাতে এমন চক্র। অন্যাবারের মতো এবারও তৎপর রয়েছে একাধিক চক্র; এমন তথ্য থেকেই সতর্ক অবস্থানে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)’র গোয়েন্দা বিভাগ। ঈদের কেনাকাটার ব্যস্ততায় বেড়ে যাওয়া ছিনতাইসহ মৌসুমী অপরাধী ধরতে আজ রোববার থেকে গোয়েন্দা একাধিক টিম মাঠে সক্রিয় থাকবেন। এ সব অপরাধীরে ধরতে ছদ্মবেশে নগরীর ব্যস্ত জায়গা ও শপিংমলগুলোর পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ডিবির একাধিক সদস্য।
এদিকে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে আগামী ৬ আগস্ট থেকে খুলনা-সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও যশোরের মণিরামপুর নিয়ে ১৫টি পশুর হাট বসবে। ওই দিন বিকলে ৪টায় পশুর হাট উদ্বোধন করা হবে।
কেএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার বি,এম নূরুজ্জামান (বিপিএম) শনিবার এ প্রতিবেদককে বলেন, আগামী ৬ আগস্ট নগরীর জোড়াগেট এলাকায় কোরবানির হাট শুরু হবে। হাটের উদ্বোধন দিন থেকে ২৪ ঘন্টার সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা টিম মাঠে থাকবে। এছাড়া কোরবানির হাটে জালটাকা সনাক্তকারী মেশিন ও অভিযোগ বুথও থাকবে। দালালদের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণ তাদের অভিযোগ বুথে দিতে পারবেন। নগরীর বড় বড় মার্কেটগুলোতে সাদা পোশাকে গোয়েন্দার একাধিক টিম মাঠে থাকবে। এছাড়া রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আজ (রোববার) থেকে গুরুত্বপুর্ণ স্পটগুলোতে সাদা পোশাকধারী ডিবি পুলিশ মাঠে সক্রিয় থাকবেন।
ডেপুটি পুলিশ কমিশনার বি,এম নূরুজ্জামান (বিপিএম) জানান, সাধারণ জনগণকে সতর্ক হতে হবে। কারণ অপরাধীচক্র পান, ডাব, শরবত, মসল্লা-মুড়ি ও নানা ধরনের মুখরোচক খাদ্যের বিক্রেতা হিসেবে হকারি করে। ভদ্র চেহারার যাত্রীবেশে বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশনে ঘুরে যাত্রীদের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে। কোরবানির হাটে মলম ও অজ্ঞান পার্টিকে ধরতে ও বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ স্থানে তাদের সাদা পোশাকধারী টিম মাঠে ২৪ ঘন্টা সক্রিয় থাকবেন। নির্বিঘেœ, নিরাপদে, নিশ্চিন্তে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উদ্যাপন নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ইউনিফর্মের পাশাপাশি সাদা পোশাকে মোতায়েন থাকবে।
এদিকে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের বাজার সুপার মোঃ সেলিম জানান, আগামী ৬ আগস্ট থেকে নগরীর জোড়াগেট এলাকায় কোবানির পশুর হাট উদ্বোধন করা হবে। এর বাইরে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও যশোরের মণিরাপুর মিলে মোট ১৪-১৫টি পশুর হাট একই দিনে উদ্বোধন করা হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রূপসা, তেরখাদার ইখড়ি, নড়াইল, কেশবপুর, শাহপুর, ফয়লা, সাতক্ষীরার কলারোয়া ইত্যাদি।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা সাধারণত তিনটি গ্রুেেপ ভাগ হয়ে কাজ করে। একটি গ্রুপ ফেরি করে খাবার বিক্রি করে। আরেক গ্রুপ উদ্ধারকর্মী হিসেবে বাসস্ট্যান্ডের আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। তৃতীয় গ্রুপ রিকশা বা ইজিবাইক নিয়ে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বসে থাকে। টার্গেট ব্যক্তি অচেতন হয়ে পড়লে পরিচিত সহযাত্রী অথবা নিকটাত্মীয় হিসেবে দ্বিতীয় গ্রুপের সদস্যরা এগিয়ে যায়। অচেতন ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার নাম করে তারা নিজেদের (তৃতীয় গ্রুপ) যানবাহনে তোলে। এরপর সুযোগ বুঝে টাকা-পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিয়ে অচেতন ব্যক্তিকে রাস্তায় ফেলে দেয়। কখনও হাসপাতালে ভর্তিও করে দেয় তারা। কিছু ক্ষেত্রে প্রথম গ্রুপ অর্থাৎ ফেরিওয়ালাই অচেতন ব্যক্তির সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়ে পালায়। এজন্য যানবাহনে চলার পথে অপরিচিত কারও কাছ থেকে কিছু না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তাগণ।