কেসিসি নির্বাচন : ঐক্যবদ্ধ আ’লীগ- বিএনপিতে অন্তঃদ্বন্দ্ব

প্রকাশঃ ২০১৮-০৪-১৫ - ২০:৫২

খুলনা : আসন্ন খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নিজ দলের মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন খুলনার আওয়ামী লীগ নেতারা। নিজেদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব কোন্দল মিটিয়ে সকলে কাজ করছেন নিজেদের প্রার্থীদের পক্ষে। অপরদিকে খুলনার বিএনপি পুড়ছে অন্ত:দ্বন্দ্বে। মেয়র প্রার্থী নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধ না থাকলেও কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে জেলা বিএনপি রয়েছে বিপরীতমুখী অবস্থানে।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, গত সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পরাজয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয় দলীয় কোন্দলকে। গুঞ্জন রয়েছে নগর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যকার কোন্দলের কারণেই তালুকদার আব্দুল খালেক পরাজিত হন। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আগামী ১৫ই মে’র খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেককে বিজয়ী করতে একাট্টা হয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্বের বিষয়ে গুঞ্জন থাকলেও দলের মনোনয়নের আগে বর্ধিত সভায় সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান এমপি মেয়র পদের জন্য সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেকর নাম উপস্থাপন করেন। ওইসময় অন্য মেয়র প্রার্থীসহ সকলেই একমত হন এ বিষয়ে। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের উপরই আস্থা রাখেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন দেওয়ার পর গত ১২ এপ্রিল তালুকদার আব্দুল খালেক মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গেলে তার সাথে উপস্থিত ছিলেন অন্য তিন প্রার্থী শেখ সৈয়দ আলী, এ্যাড. মো. সাইফুল ইসলাম ও আনিসুর রহমান পপলু। সরাসরি প্রচারণায় বাঁধা থাকায় প্রকাশ্যে নামতে পারেননি সিটির দুই সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান ও বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। তবুও তারা দলের অভ্যন্তরীণ সভায় জোরালো ভাবে প্রার্থীকে বিজয়ী করার ব্যাপারে আহ্বান জানিয়েছেন। নির্বাচন উপলক্ষে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে খুলনায় এসেছেন কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল হোসেন ও প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই শেখ সোহেল।
এ বিষয়ে আ’লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সকল নেতাকর্মী ঐক্যমতে পৌছেছেন। কেউ দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করলে কেন্দ্র থেকে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বর্তমানে খুলনার আওয়ামী লীগে কোন দ্বন্দ্ব নেই। সবাই নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কাজ করছেন।
বিএনপি সূত্র জানায়, নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ ঐক্যমতে পৌছালেও বিএনপির প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন। বর্তমান মেয়র মনিরুজ্জামান মনিকে বাদ দিয়ে অনাগ্রহী প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে মনোনয়ন দেওয়ায় নিজেদের মধ্যেই চলছে চাপাক্ষোভ। এছাড়াও দুইবার দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েও বঞ্চিত হয়েছেন জেলা বিএনপি সভাপতি শফিকুল আলম মনা। যা নিয়ে জেলা ও নগর বিএনপিতে অন্ত:দ্বন্দ্ব চলছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
সম্প্রতি কেন্দ্র থেকে মেয়র পদে নগর বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে মনোনয়ন দেওয়ার পর স্থানীয়ভাবে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয় বিএনপি। সাধারণ ২৯টি ওয়ার্ডে একক প্রার্থী ও ২টি উন্মুক্ত, সংরক্ষিত ৯টি ওয়ার্ডে একক ও ১টি ওয়ার্ড উন্মুক্ত রাখা হয়। কিন্তু তাদের সিদ্ধান্তের দু’দিন পর দু’টি ওয়ার্ডে পাল্টাপাল্টি প্রার্থী ঘোষণা করে জেলা বিএনপি। গুঞ্জন চলছে ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে বর্তমান কাউন্সিলর আনিসুর রহমান বিশ্বাসকে নগর বিএনপি মনোনয়ন না দিলেও দেবে জেলা বিএনপি।