খুলনাসহ তিন বিভাগে মৃদু শৈত্য-প্রবাহ অব্যাহত : তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা

প্রকাশঃ ২০২০-০১-১৪ - ১৮:২৫

কামরুল হোসেন মনি : খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে মৃদু শৈত্য-প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। রোববার থেকে বয়ে যাওয়া এই শৈত্য-প্রবাহ আগামী ২/১ দিন অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে তাপমাত্রা আরও একটু কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন খুলনার আবহাওয়াবিদ। সোমবার খুণলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন ছিলো ১৩ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে খুলনা বিভাগে মৃদু শৈত্য-প্রবাহ বয়ে যাওয়ায় দিনকে দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ঠা-াজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। খুলনা সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহম্মেদ বলেন, ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে রোটা নামক ভাইরাসজনিত কারণে মানুষের ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। সেই সাথে রয়েছে নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন ঠান্ডা জনিত রোগ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডায়রিয়া রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
খুলনার আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ সোমবার দুপুরে এ প্রতিবেদককে বলেন, গতকাল খুলনায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিলো ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ছিলো ২২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন রোববার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিলো ১৩ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ছিলো ২২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার থেকে খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের এই মৃদু শৈত্য-প্রবাহ শুরু হয়েছে। আগামী ২-১ দিন এই শৈত্য-প্রবাহ অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে ওই আবহাওয়াবিদ উল্লেখ করেন।
খুলনা সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহম্মেদ বলেন, উপজেলাগুলোতে ঠা-াজনিত ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চিকিৎসকদের রোগীদের সেবায় বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করা হয়। তিনি বলেন, সভায় অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়েছে। এই মুহূর্তে কোনো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো ওষুধ সঙ্কট নেই। প্রতিদিন এই বিষয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এদিকে শীতের তীব্রতায় খুলনা জেলায় ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশুদের পাশাপাশি বয়স্করাও ডায়রিয়াসহ নানা ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, খুলনায় ৯ উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর এই তিন মাসে ১৩ হাজার ১৮০ ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে গত ডিসেম্বর মাসে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিলো ৩ হাজার ৪৯৯ জন। এর মধ্যে দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১২ জন, বটিয়ঘাটায় ৩৪৫ জন, পাইকগাছায় ৬৪৭ জন, কয়রায় ৩৩৫ জন, রূপসায় ৩৪৫ জন, দিঘলিয়ায় ৩৬৩ জন, তেরখাদায় ৪৭৫ জন, ফুলতলায় ২৮৫ জন ও ডুমুরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৯২ ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সেবা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এর আগে নভেম্বর মাসে ৪ হাজার ৬৮১ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীকে সেবা প্রদান করা হয়। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে মীরেরডাঙ্গা আইডিয়াল হাসপাতালে ২৭৩ জন এবং নগরীর শিশু হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি ছিলো ৩৪৬ জন। অক্টোবর মাসে ছিলো ৪ হাজার ৮৪০ জন। এর বাইরে মীরেরডাঙ্গা আইডিয়াল হাসপাতালে ২৪০ জন ও শিশু হাসপাতালে ৩৪৬ শিশুকে ডায়রিয়ার চিকিৎসা প্রদান করা হয়।