ডুমুরিয়ার অধিকাংশ স্কুল ছেয়ে গেছে নিষিদ্ধ নোট-গাইডে

প্রকাশঃ ২০১৮-০৪-২৮ - ২১:৫৯

ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি : ডুমুরিয়ায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্টানে নোট-গাইডে ছেয়ে গেছে। সরাকারি ভাবে এই বই নিষিদ্ধ করা হলেও উপজেলার অধিকাংশ প্রতিষ্টান কর্তারা এটা মানেননি। বিনিময়ে তারা হাতিয়ে নিয়েছেন অনেক টাকা। প্রতি বছর উপজেলা শিক্ষক সমিতি এ সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করলেও এবার আভ্যন্তরীন মত-পার্থক্যের কারনে কর্মকর্তারা রয়েছেন নীরব দর্শকের ভুমিকায়।
জানা গেছে, সরকারি ভাবে নোট-গাইড বই নিষিদ্ধ করা হলেও ডুমুরিয়া উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্টান প্রধানরা এটা মানেননি। প্রায় প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থীদের অধিক মূল্যে এই বই কিনতে হয়েছে। আর এ থেকেই প্রত্যেক স্কুল প্রধানরা আয় করেছেন ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
জানা গেছে, বছরের শুরুতে পাঞ্জেরি, জুপিটার, পপি, আশার আলো, ফুলকুড়ি, অনুপম নামক এইসব প্রকাশনীর লোকেরা ডুমুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে সমিতির মাধ্যমে উপজেলার ৬৩টি বিদ্যালয়ে নোট ও গাইড বই প্রচলনের সিন্ধান্ত হয়। কিন্তু সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দু’টি প্যানেলের মত-পার্থক্যর কারণে কিছু দিন পরেই তা ভেস্তে যায়। এরপর কোম্পানীর লোকেরা স্ব স্ব প্রতিষ্টান প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটির লোকদের সাথে গোপনে অর্থ চুক্তির বিনিময়ে বই বিক্রি করেন। এ বছর উপজেলায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার নিষিদ্ধ এই বই বিক্রি হয় বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান, জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখে স্যারেরা আমাদের হাতে বুকলিস্ট দিয়ে বলেন এ মাসের মধ্যে এই বই কিনবে। তবে এই বই কিনতে এবার বাজারে যেতে হয়নি স্কুলে বসেই কেনা গেছে।
ডুমুরিয়া উপজেলার শেখ আমজাদ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমান মোড়ল জানান, বই বিক্রেতারা আমার স্কুলে এসে ৩০ হাজার টাকা অপার করেছিল। কিন্তু ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ ও সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় কোন প্রলোভনে রাজি হয়নি এবং আমার স্কুলের কোন শিক্ষার্থী নোট গাইড কিনতে দেওয়া হয়নি।
ডুমুরিয়া উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি সরদার আরজান আলী জানান, বই পরিবেশকদের সাথে আমরা বৈঠক করেছিলাম। একটা সিন্ধান্তে পৌঁছে যাওয়ার পরে আমাদের ভিতরের প্যানেলগত মত-পার্থক্যর কারনে তা বন্ধ করে দিই। এখন শুনছি স্ব স্ব স্কুলকে ম্যানেজ করে বই বিক্রি হচ্ছে। তবে কোন কোন স্কুল এটা করছে তা বলা সম্ভব না।
ডুমুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দেবাশীষ বিশ্বাস জানান, শিক্ষার্থীদের নোট-গাইড কিনতে উৎসাহিত করা আইনত অপরাধ। ডুমুরিয়ায় নোট গাইড কেউ কিনছে কিনা আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।