দাকোপে প্রধান শিক্ষকের কিলে ৫ম শ্রেনীর ছাত্রী হাসপাতালে

প্রকাশঃ ২০২০-০২-০২ - ১৯:০৪

আজগর হোসেন ছাব্বির, দাকোপ : দাকোপে প্রধান শিক্ষকের এক কিলে ৫ম শ্রেনীর ছাত্রী হাসপাতালে। ঘটনার পর যন্ত্রনাকাতর শিশুটি সেখানেই শুয়ে পড়ে। কিন্তু পাষন্ড শিক্ষক সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে স্কুল ছেড়ে চলে যায়। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষকের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা সদর আনন্দ নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ভুক্তভোগীর সহপাঠিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ৫ম শ্রেনীর ইংরেজী বই পাঠদানে যায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুরঞ্জন কুমার বিশ্বাস। তিনি শ্রেনী কক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ডেকে স্কুলে থাকা জন্ম নিবন্ধনের ফাইল এগিয়ে দিয়ে সে গুলো বাছাই করতে নির্দেশ দেন। বাছাই চলাকালীন আবার তাদেরকে নির্দিষ্ট আসনে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এ সময় দৃষ্টি জোয়াদ্দার এবং জুই খাতুন নামের ২ ছাত্রী ছিটে ফিরতে দেরি করে। এ ঘটনায় উত্তেজিত শিক্ষক সুমি নামের অপর ছাত্রীকে ডেকে বলে “এদের দু’জনকে মেরে ফেল দেখি”, এ কথা বলে এগিয়ে গিয়ে দৃষ্টির তলপেটের ডান পাশে স্বজোরে কিল মারে। সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রীটি বাবাগো বলে চিৎকার করে সেখানে লুটিয়ে পড়ে। কিন্তু পাষন্ড শিক্ষক সুরঞ্জন সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে ক্লাস থেকে বেরিয়ে স্কুল ছেড়ে চলে যায়। তাৎক্ষনিক দৃষ্টির সহপাটি জুই, তুলি, সুমাইয়া, সুমিসহ অন্যরা দৌড়ে বাইরে এসে চেচামেচি করে মাথায় ঢালার উদ্যোগ নেয়। তখন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফেরদৌস পারভীন এবং কাকলী রায় সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি খারাপ দেখে শিশুটির পরিবারকে খবর দেয়। ততক্ষনে অভিযুক্ত শিক্ষক আবার স্কুলে ফিরে এসে ঘটনা দেখে পরিবারের সাথে শিশুটিকে নিয়ে প্রথমে চালনা বাজারে ডাঃ হরিদাস বাবুর চেম্বারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। কিন্তু শিশুটি ব্যাথায় কাতর হতে থাকলে তাকে দাকোপ উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার মোজাম্মেল হক নিজামীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, স্বজোরে আঘাত লাগায় তলপেটের ডানপাশে প্রচন্ড ব্যাথায় কাতর হয়ে পড়ে। তবে চিকিৎসা দেওয়ায় এখন আশংকামুক্ত। ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষককে বিদ্যালয় এবং হাসপাতালে গিয়ে না পেয়ে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু একবার রিং হওয়ার পর থেকে তার নাম্বারটি বন্দ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহিদুল ইসলাম বলেন, আমি কিছুক্ষন আগে ঘটনাটি জেনেছি। শিক্ষার্থীদের শাররীক নির্যাতনের বিষয়টি জিরো টলারেন্স নীতিতে দেখা হবে। দোষী প্রমানিত হলে তাকে অবশ্যই বিধি মোতাবেক শাস্থি পেতে হবে। ভিকটিম ছাত্রী দৃষ্টি আনন্দ গ্রামের শ্রমজীবি কার্তিক জোয়াদ্দারের কন্যা।