ভারতীয় ভিসা অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি

প্রকাশঃ ২০১৯-০৮-২২ - ১১:২২

কামরুল হোসেন মনি : ভ্রমণের জন্য ভারতীয় ভিসা পেতে ই-টোকেনের ব্যবস্থা তুলে নেওয়া হলেও কমেনি দালালদের দৌরাত্ম্য। নগরীর কেডিএ এভিনিউস্থ স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ভিসা প্রসেসিং অফিসের সামনে দিনের অধিকাংশই ১৫-২০ জন দালালের নিয়ন্ত্রণে থাকে। এদের একেক গ্রুপে ৪-৫ জন করে সদস্য থাকে। মাঝেমধ্যে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) অভিযান চালিয়ে দালালদেরক আটক করলেও থেমে নেই এই চক্রটির দৌরাত্ম্য। দালালরা স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় সাধারণ দোকানীরা ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না। খুলনা ও বাগেরহাটের মানুষ বিশেষ করে মহিলাদের টার্গেট করে ওই দালাল চক্র।
কেএমপি’র ডেপুটি পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ এহ্সান শাহ্ বলেন, নগরীর ভিসা অফিসের সামনে তাদের সাদা পোশাকধারী পুলিশ নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর আগে অভিযান চালিয়ে একাধিক দালালকে আটক করা হয়েছে। ভ্রমণের জন্য ভারতীয় ভিসা পেতে এসে যাতে সাধারণ মানুষ দালালদের খপ্পরে না পড়ে সে জন্য সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া আছে। সার্বক্ষণিক তাদের সাদা পোশাকধারী পুলিশ নিয়োজিত আছে। দালাল চক্রকে ধরতে একাধিক টিম মাঠে সক্রিয় রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে ভ্রমণের জন্য ভিসা পেতে ই-টোকেনের ব্যবস্থা তুলে নেওয়া হয়। তারপর থেকে অনলাইনের মাধ্যমে ভারতের ভিসা পেতে আবেদন করলে ৫ দিনের মধ্যে আবেদনকারীকে ভারতীয় ভিসা অফিসে পাসপোর্ট জমা দেওয়া পর্যন্ত সময় দিয়ে দেন। সেক্ষেত্রে সাধারণ দোকানীরা অনলাইনের মাধ্যমে ভারতীয় ভিসা প্রসেসিং এর জন্য আবেদনকারীদের কাছ থেকে মাত্র ১০০-২০০ টাকা নেন। আবেদনটি রি-প্রিন্টের জন্য নেওয়া হয় ৫০-১০০ টাকা ।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি জনৈক মহিলা ভারতীয় ভিসা অফিসের সামনে আসলে এক দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন। ওই দালাল তাকে রি-প্রিন্ট করার কথা বলে নিয়ে যান। রি-প্রিন্ট বের করে দেওয়ার পর ওই মহিলার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। এক পর্যায়ে মহিলার পাসপোর্ট আটকে রাখেন ওই দালাল। পরে নিরুপায় হয়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা মহিলা দিতে বাধ্য হয়।
অনেক কষ্ট করে যখন পাসপোর্ট, অন্যান্য কাগজপত্র নিয়ে আবেদন জমা দিতে আসেন তখন আবার নানান ছুতোয় তা বাতিল করা হয়। শেষ পর্যন্ত যখন আর এলাকায় ফিরে গিয়ে কাগজপত্র আনার সময় না থাকে তখনই তাদেরকে দালালদের শরণাপন্ন হতে হয়। দালালদের দৌরাত্ম্য কমাতে ২০১৮ সাল থেকে ভারতীয় হাইকমিশন ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে ই-টোকেন ব্যবস্থা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তারপরেও খুলনায় ভারতীয় ভিসা অফিসের সামনে দালালদের দৌরাত্ম্য কমেনি। দালালদের খপ্পরে পড়ে নিরীহ মানুষগুলো নানাভাবে হয়রানির শিকারসহ মহিলাদেরও লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ আছে।
এভাবেই ভারত ভ্রমণেচ্ছু বাংলাদেশিদের দালালদের কাছে জিম্মি হয়ে থাকতে হয়। অনলাইন আবেদন ফরম থেকে শুরু করে জমা দেওয়া পর্যন্ত দালালদের কাছে জিম্মি হয়েই থাকতে হয় খুলনাঞ্চলের মানুষদের।
অধিকাংশ দালাল স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ার কারণে ভারতীয় ভিসা প্রসেসিং দোকানারীরা তাদের বিষয়ে ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না।