সেই ভুল চিকিৎসার রোগীকে পুনরায় অপারেশন 

প্রকাশঃ ২০১৮-১০-২০ - ১৮:০০

আনোয়ারা মেমোরিয়াল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার

ধামাচাপা দিতে কর্তৃপক্ষের দৌঁড়ঝাঁপ

কামরুল হোসেন মনি  : হতদরিদ্র বৃদ্ধ (৬০) ইলিয়াসের পুনরায় অপারেশন করা হয়েছে। এর আগে কিডনী অপারেশন করার সময় তার খাদ্যনালী কেটে যাওয়ায় অপারেশন জায়গা থেকে মল বের হচ্ছিলো। আনোয়ারা মেমোরিয়াল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার তার এ ভুল অপারেশন করায় এ পরিস্থিতি ঘটে। গত ৫ অক্টোবর ‘ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর ঝুঁকি’ শীর্ষক শিরোনামে দৈনিক প্রবাহে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেন। সংবাদ প্রকাশিত না হওয়ার জন্য স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের পরিচয় দিয়ে কতিপয় ব্যক্তি এ প্রতিবেদককে হুমকির সুরে নিউজ না করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র মতে, উল্লিখিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরের দিন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ইলিয়াসের পুনরায় অপারেশন করা হয়। বর্তমানে তিনি এখনও ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সূত্র মতে, যে অপারেশনটি পুনরায় করা হয়েছে, সেটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওই ক্লিনিকে গভীর রাতে এ অপারেশনটি করা হয়।
এ ব্যাপারে আনোয়ারা মেমোরিয়াল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকের ভাই মোঃ এনায়েত হোসেনকে একাধিকবার তার ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে তার এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠালোও তিনি কোন সাড়া দেননি।
এ ব্যাপারে ওই হাসপাতালের মালিকের শালা পরিচয়দানকারী ডাঃ রাহাতকে বুধবার তিনি পুনরায় অপারেশনের কথা স্বীকার বলেন, পত্রিকায় লেখালেখির মধ্যে ইলিয়াসের পুনরায় অপারেশন করা হয়েছে। এর আগে যে চিকিৎসক (ডাঃ মুকুল) ইলিয়াছকে অপারেশন করেছেন সেই ডাক্তারই অপারেশন করেন। অপারেশনের মাধ্যমে ওই ক্ষতস্থান থেকে ড্রেন বের করে (তৈরি করে) দেওয়া হয়েছে। ইলিয়াসকে এখনো রিলিজ দেওয়া হয়নি। এখন সে সুস্থ আছে। দুই-একদিনের মধ্যে তাকে রিলিজ দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ অক্টোবর আনোয়ারা মেমোরিয়াল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ‘ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু ঝুঁকি’ দৈনিক প্রবাহে প্রকাশিত হওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেন। ওই হাসপাতালে বৃদ্ধ ইলিয়াসের কিডনী অপারেশন করার পর তার সেলাই করা ক্ষতস্থান থেকে মল বের হওয়ার তথ্য বেরিয়ে আসে। বিশেষজ্ঞ সার্জারি চিকিৎসকরা জানান, কিডনী কেটে ফেলার সময় যদি চিকিৎসকের অসাবধনতাবশত অস্ত্রের আঘাতে খাদ্যনালীতে ফুটো হয়ে যায় তাহলে সেলাই করার পর ওইখান থেকে মল বের হবে। এছাড়া অন্য কোনো কারণে মল আসার সম্ভাবনা নেই। তবে চিকিৎসক ডাঃ শহিদুল ইসলাম মুকুলের বক্তব্য রোগীর ক্যান্সার হওয়ার কারণে এ সমস্যা।