মোহাম্মাদ মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর(দিনাজপুর): টানা সপ্তাহ জুড়ে শৈত্য প্রবাহে প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে দিনাজপুরসহ চিরিরবন্দরের মানুষের জীবন- যাত্রা। বিকেল থেকেই তাপমাত্রা নিম্নগামী হওয়ায় সন্ধার পরপরই ফাকা হয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষজন।ঘন কুয়াশা ও প্রচন্ড ঠান্ডায় নাকাল হয়ে পড়ছে জনজীবন।
এদিকে কাজে বের হতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবি কেটে খাওয়া মানুষ। শিশু ও বৃদ্ধারা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। জানাযায়, গত ২৪ ঘন্টায় চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে নিউমোনিয়া ও শ্বাস কষ্টে আক্রান্ত হয়ে ১৫ জন শিশু, ডায়রিয়ায় ৬জন, অন্যান্য রোগে ২১ জন ভর্তি হয়েছে।
চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মর্তূজা আল মামুন জানান, উপজেলা হাসপাতালে গত ২৪ ঘন্টায় ৪২ জন ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। এছাড়া ঠান্ডাজনিত কারনে অনেক শিশুর আউটডোরেচিকিৎসা সেবা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। গতকাল সোমবার (৮ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এ অবস্থায় সকাল থেকে কনকনে ঠান্ডা আর হিমেল হাওয়া বৃদ্ধি পাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়েছে চিরিরবন্দরের মানুষ। অন্যদিকে ঘন কুয়াশা ও শীতে বোরো বীজতলা, আলু, সবজিক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। উপজেলার সাতনালা ইউনিয়নের নালীপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম, আলোকডিহি ইউনিয়নের গছাহার গ্রামের কৃষক জিয়ারুল হক জানান, শীতের কারণে তাদের আলুক্ষেতে ছত্রাক জাতীয় রোগ দেখা দিয়েছে। এতে বাড়তি অর্থ ব্যয় করে ফসলে ছত্রাক জাতীয় ওষুধ স্প্রে করতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসারও কৃষিবিদ মাহমুদুল হাসান জানান, শৈত্যপ্রবাহের কারণে ফসলের ক্ষতি হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে এ অবস্থা খুব বেশি দিন স্থায়ী হবে না। আমরা প্রতি শীত মৌসুমে এ রকম অবস্থার মুখোমুখি হই। তবে এরকম আবওয়ায় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সকল প্রকার পরমর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।