রবিউল ইসলাম মিটু, যশোর : যশোরের মনিরামপুরে আকবার আলী নামে এক দিনমজুরকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। নিহতের দুই হাতে আঘাতের চিহ্ন এবং পাশে একটি ওড়না ছিল। পুলিশ হত্যাকা-ের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী হালিমা, ছেলে মিন্টু ও মেয়ে সোনিয়াকে হেফাজতে নিয়েছে। নিহত আকবার যশোর সদর উপজেলার ডরহসিঙ্গা গ্রামের আবু তালেবের ছেলে। সে মনিরামপুরের হেলাঞ্চি কৃষবাটি গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন।
গ্রামবাসী জানান, আকবর আলী খুবই পরিশ্রমী ও সৎ ব্যক্তি ছিলেন। তবে, তার স্ত্রীর স্বভাবচরিত্র বেশি একটা ভাল না। রাতে তার ঘরে কেউ ঢুকে পড়ে যা আকবার দেখে ফেলেন। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এ হত্যাকা- ঘটতে পারে বলে তাদের ধারণা।
আকবরের স্ত্রী হালিমা সাংবাদিকদের বলেছেন, রাতে স্বামীর সাথে ঘুমিয়ে ছিলাম। গভীররাতে চার-পাঁচজন ঘরে ঢুকে আমাদের দুজনের মুখ বেঁধে ফেলে এবং আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। তখন আমার স্বামী তাদের বলেন, তোরা তাকে না মেরে আমাকে মার। এই কথা শুনে ওরা আমার স্বামীকে হত্যা করে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি হালিমার।
মনিরামপুরের খেদাপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি এসআই আইনুদ্দীন বলেন,‘খবর পেয়ে সকালে আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। হালিমা আমাকে বলেছে,‘রাত নয়টার সময় সে পাশের এক বাড়িতে টেলিভিশন দেখতে যায়। তখন আকবার আলী তাকে সেই বাড়ি থেকে ডেকে আনে। পরে তারা একই খাটে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত একটার দিকে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায় তার। ঘুম ভাঙ্গার পর হালিমা দেখতে পায় তার স্বামীর মুখ বাঁধা। পরে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তার স্বামী খুন হয়।
সকালে খবর পেয়ে হালিমার মেয়ে সোনিয়া আসে। এসেই শুরুতে সে তার মায়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলে, তোর কারণেই আমার বাপকে খুন হতে হলো। পরে সোনিয়া কথা ঘুরিয়ে নেয় বলে জানান এসআই আইনুদ্দীন।
এদিকে প্রতিবেশিরা জানান, রাতে হালিমার ঘরে অন্য লোক ঢোকে। বিষয়টি আকবার আলী টের পেয়ে যান। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তাকে খুন করা হয়েছে। পাশের ঘরে নিহতের ছেলে মিন্টু ঘুমিয়ে থাকলেও সে কিছুই টের পায়নি।
আকবরের ভাই আজগার আলী বলেন, আমার ভাই খুন হতে পারেন না। এরমধ্যে রহস্য আছে।’
মণিরামপুর থানার ওসি মোকাররম হোসেন বলেন, রহস্য উদঘাটনে নিহতের স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।