ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে
রমরমা ব্যবসা
ইউনিক প্রতিবেদক : প্যাথলজি বিভাগে পরীক্ষার রি-এজেন্ট সঙ্কট থাকায় শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের কাউন্টার খোলা থাকলেও ৩ মাস হচ্ছে না রোগ নির্ণয়। ৩১ রকমের রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা থাকা সত্বেও বর্তমানে রি-এজেন্টের অভাবে মাত্র ৩ রকমের রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা চালু আছে। হাসপাতালের এ অচলাবস্থা সৃষ্টির কারণে সুযোগ নিচ্ছে বাইরের ডায়াগনিস্টিক সেন্টারগুলো। এতে করে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা প্রত্যাশি রোগীদের জরুরী মুহুর্তে রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা করতে এসে চরম ভোগান্তির সন্মুখিন হচ্ছে। পাশাপাশি এসব পরীক্ষার জন্য সরকারী নির্ধারিত ফি থেকে প্রাইভেট ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে যেয়ে তিন গুন অর্থ শুনতে হচ্ছে রোগীদের।
সরোজমিনে দেখা যায় শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালে প্রতিদিন সকাল থেকে খোলা রয়েছে প্যাথলজি বিভাগ। তবে ভিতরে হচ্ছে না কোন কার্যক্রম। অলস সময় পার করছেন দ্বায়িত্বরত কর্মচারীরা। রোগীরা রোগ নির্ণয় করার জন্য প্যাথলজি বিভাগে এসে একরাস হতাশা নিয়ে ফেরত চলে যাচ্ছেন। আর এই সুযোগে হাসপাতালটিতে সুযোগে থাকা দালাল রোগীদের নিয়ে যাচ্ছে বাইরের ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে। এতে করে রোগীদের নামমাত্র পরীক্ষা করে টাকা হতিয়ে নিচ্ছে।
খুলনা রূপসা থানা শ্রীফলতলা থেকে আসা চিকিৎসা প্রত্যাশি রোগী জান্নাত আরা (৪৮) বলেন, বুকে ব্যাথার কারণে আবু নাসের হাসপাতালে কার্ডিওলজী বহির্বিভাগ ১০৭ নম্বর রুমে চিকিৎসক দেখিয়েছেন। ডাঃ রোগ নির্ণয় করার জন্য কিছু পরীক্ষা দিয়েছেন। সকালে খালী পেটে এসেছি। অথচ দেখি প্যাথলজি পরীক্ষা বন্ধ। এ কারণে বাইরের ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে যেয়ে পরীক্ষা করে এসেছি। প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। যে পরীক্ষা আবু নাসের হাসপাতালে করলে খরচ হতে মাত্র নয়শ টাকা। তাছাড়া এ রকম একজন রোগী না, প্রতিদিন শত শত রোগী এমন ভোগন্তির শিকার হচ্ছে।
শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালে প্যাথলজি চিকিৎসক ডাঃ সুকুমার সাহা বলেন, ১১ অক্টেম্বর থেকে হাসপাতালটিতে রোগ নির্ণয় করার জন্য রি-এজেন্ট সঙ্কট চলছে। বেশ কয়েকটি প্যাথলজি পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে হরমোন পরীক্ষা, টি ফোর, টিথ্রি, টিএসএইচ, ট্রোপো নাইন, এইচবিএ ওয়ানসি, পিএস, এএইচবিআইসি, সিরাম ক্রিটেনিনসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক পরীক্ষা। শুধু ভাইরাস পরীক্ষা ছাড়া অন্য কোনো পরীক্ষাই এ হাসপাতালে হচ্ছে না। তবে রি-এজেন্ট আসলে আবারো সব ধরনের পরীক্ষা চালু করা হবে।
শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের উপঃ পরিচালক ডাঃ মোর্শেদ আলশ বলেন, হাসাপতালটিতে প্যাথলজি পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। রি-এজেন্ট সঙ্কট থাকার কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি অফিসে চিঠি দিয়েছি। তবে এখনও এপিপি অনুমোদন না পওয়ার কারণে দরপত্র আহবান করতে পারিনি। আশা করি দ্রুত এর সমাধান হবে। তাছাড়া দ্বায়িত্বরত চিকিৎসকরা রোগীদের আপনারা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রোগ নির্ণয় করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মাদ খুরশীদ আলম বলেন, আমি বিষয়টি জানিনা। আমার কাছে এমন কোন ফাইল আসেনি। যদি ফাইল আসে অবশ্যই দ্রুত ব্যবস্থা নিব।