ঢাকা অফিস : রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইব্রাহিম হোসেন ওরফে হৃদয়ের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার, ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. জসিম পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তাসলিমা বেগম রেনু হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন ফুটেজ দেখে হৃদয়কে এ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম রেণু হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে মামলার প্রধান অভিযুক্ত হৃদয়। গতকাল রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে রেণু হত্যায় আরও সাতজনের জড়িত থাকার কথাও জানিয়েছে হৃদয়। বুধবার দুপুরে, সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গত ২০শে জুলাই, রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য তথ্য জানতে স্কুলে গিয়ে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে মারা যান তসলিমা বেগম রেনু।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, ‘প্রধান আসামি হৃদয় স্থানীয় সবজি বিক্রেতা। গত ২০শে জুলাই রেনুকে ছেলেধরা হিসেবে এক নারী চিহ্নিত করলে মুহূর্তেই সে খবর ছড়িয়ে পড়ে। সে সময়, রেনুকে স্কুলের দোতলায় আটকে রাখা হয়। একপর্যায়ে তালা ভেঙে রেনু বের করে এনে পিটিয়ে হত্যা করে হৃদয়সহ আরও সাত-আটজন।’ হৃদয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ঘটনা জড়িত অন্যদেরও আইনে আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানান আব্দুল বাতেন।
ঘটনার সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে কয়েকজন যুবককে উৎসাহ নিয়ে মারতে দেখা যায়। পরবর্তীতে এসব যুবকের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাদের ধরিয়ে দেয়ার আহ্বানও জানানো হয়। এদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ইব্রাহিম হোসেন ওরফে হৃদয় নামে এক যুবক।
এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হলে কয়েকজন যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে, হৃদয় ছিল পলাতক। মঙ্গলবার রাতে, ঘটনার পাঁচ দিন পর নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ গুজব ছড়ালে বা এমন পোস্টে কমেন্ট করে উৎসাহ দিলেও তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার।
প্রসঙ্গত, শনিবার সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় মেয়েকে ভর্তি করানোর তথ্য জানতে স্থানীয় একটি স্কুলে যান তাসলিমা রেনু (৪০)। এ সময়, তাকে ছেলেধরা সন্দেহে প্রধান শিক্ষকের রুম থেকে টেনে বের করে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন নিহত তাসলিমা বেগম রেনুর ভাগনে নাসির উদ্দিন।