মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা : বাগেরহাটের শরণখোলায় স্কুল ছাত্রী (১৫) ধর্ষণের অভিযোগে মামা-ভাগ্নের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে ধর্ষিতার মা (৩৮) বাদি হয়ে শরণখোলা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় উপজেলার আমড়াগাছিয়া গ্রামের বাসিন্দা রুহুল আমিন হাওলাদারের ছেলে ও মোড়েলগঞ্জ এস.এম কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী রায়হান উদ্দিন রুমানকে (২১) প্রধান আসামী করা হয়েছে। এছাড়া, ঘটনার পর ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে রায়হানের মামা ধানসাগর ইউনিয়নের ৫নম্বর আমড়াগাছিয়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেনকেও (৪৮) ওই মামলায় আসামী করা হয়।
পুলিশ রবিবার সকালে দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করে বাগেরহাট আদালতে পাঠিয়েছে। এছাড়া, ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীকেও ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রায়হান দীর্ঘদিন ধরে আর.কে.ডি.এস বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। তাতে সে রাজি না হওয়ায় গত ২৬ জানুয়ারি স্কুল ছুটির পর উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলো ওই স্কুল ছাত্রী। এমন সময় রায়হান তাকে কৌশলে ডেকে পার্শ্ববর্তী খোন্তাকাটা গ্রামের ফারুক আকনের বাড়িসংলগ্ন একটি বাগানের নির্জন স্থানে নিয়ে চেতনা নাশক ওষুধ খাইয়ে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে যায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা অসুস্থাবস্থায় ওই মেয়েকে উদ্ধার করে শরণখোলা হাসপাতালে ভর্তি করে।
অপরদিকে, অভিযুক্ত রায়হানের অপর এক মামা এবং ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীরের বড় ভাই মো. খলিলুর রহমান জানান, তার ভাগ্নে রায়হানের সাথে ওই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক চলছে। ঘটনার আগের দিন রাতে (২৫ জানুয়ারি) ওই মেয়ে ঘুমের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হলে সকালে তাকে হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। এসুযোগে মেয়েকে রায়হানের ঘাড়ে চাপানোর জন্য মেয়ের মা রায়হানকে ওইদিন সকাল ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে তাদের বাড়িতে ডেকে নেয়। তাকে আটকে রেখে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে মেয়ের পরিবার। এতে রাজি না হওয়ায় রায়হানকে বিকেলে হাসপাতালে আনার কথা বলে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া, তার ছোট ভাই ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হাসপাতালে গিয়ে বিষয়টি জানতে চাওয়ায় মেয়ের পরিবার হুমকির মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাকেও আসামী করে। ধর্ষণের যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ সাজানো বলে তিনি দাবি করেন।
শরণখোলা থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো. কবিরুল ইসলাম জানান, স্কুল ছাত্রীর মা বাদি হয়ে মামলা দায়েরের পর রায়হান ও তাঁর মামাকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, ওই স্কুল ছাত্রীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।