অন্তঃসত্ত্বা ৩১ বছরে, প্রসব করলেন ৯২ বছরে

প্রকাশঃ ২০২৩-০৮-২২ - ১৫:২২

ইউনিক ডেস্ক : শরীরের কখন কোন রোগ থাবা বসাবে, তা আগে থেকে বোঝা প্রায় অসম্ভব। কখনও তা এমনই মারাত্মক আকার ধারণ করে, যা মৃত্যু অবধি ডেকে আনে। তবে এই নারীকে মৃত্যুর আগে সেই যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছিল। তাও দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে হিস্টোরিক ভিডস নামে ভেরিফাইড পেজে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে চীনে। তার নাম হুয়াং ইজান। ৩১ বছর বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হন তিনি। প্রথমদিকে সবকিছু একেবারেই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু গর্ভধারণের নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও তার প্রসব হয়নি। এরপরই হুয়াং ইজান বুঝতে পারেন কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। চিকিৎসকের কাছে গেলে তারা এই ঘটনার অদ্ভুত এক বাখ্যা শোনান।

ডাক্তারি ভাষায় যার নাম, একটোপিক প্রেগনেন্সি। যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে বেশ বিরল। এ ক্ষেত্রে ভ্রুণ জরায়ুর মধ্যে বড় না হয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। ফলে স্বাভাবিকভাবে আকারে বাড়লেও তা দেহের বাইরে আসার সুযোগ পায় না। এমতাবস্থায় অস্ত্রোপচার করে শিশুটিকে শরীর থেকেই আলাদা করে নেওয়াই শ্রেয়। কিন্তু সেই সময় এমনটা করার মতো আর্থিক সংগতি ছিল না। তাই কিছুই না করে যন্ত্রণা সহ্য করতে থাকেন ইজান। এভাবেই কেটে যায় দীর্ঘ ৬০ বছর। এতদিন ওই শিশুকে নিজের সঙ্গে বয়ে বেরিয়েছেন তিনি।

তবে এর ফল হয়েছিল মারাত্মক। এতদিনে ওই শিশু একটি পাথরে পরিণত হয়। আর কিছুদিন তাকে দেহে রাখলে মৃত্যু অবধারিত ছিল ইজানের। তাই ৯২ বছর বয়সে অস্ত্রোপচার করাতেই হয় তাকে। সেই পাথর হয়ে যাওয়া শিশুটিকে বের করে আনেন চিকিৎসকরা। ডাক্তারি ভাষায় এই পাথর হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে, লিথোপেডিয়ান বলে। চিকিৎসকদের কথায়, এমন ঘটনা লাখে একজনের সঙ্গে হয়।

হিসাব মতো, ওই নারী জন্ম দিয়েছেন ৬০ বছর বয়সী এক শিশুকে। বলাই বাহুল্য, সাধারণ কারও পক্ষে এই কষ্ট সহ্য করাই হয়তো অসম্ভব। কিন্তু ইজান তা পেরেছিলেন। হয়তো তিনি ‘মা’, তাই পেরেছিলেন।