কুষ্টিয়া : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সম্মান প্রথম বর্ষের ভর্তিতে গতবারের মতো এবারও ভোগান্তিতে ফেলেছে গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া। গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষে ক্লাস শুরু করতে পারেনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। রেজাল্ট প্রকাশের পাঁচ মাস শেষ হলেও বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধসহ নানা জটিলতায় চূড়ান্ত ভর্তি এবং ক্লাস শুরুর তারিখ নির্ধারণ করতে পারেনি প্রশাসন। জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বেশ কয়েক বছর ধরেই ভর্তি কার্যক্রম শেষ করে বছর শুরুর মাস থেকেই বিভাগগুলোতে ক্লাস শুরু হতো। কিন্তু গুচ্ছ পদ্ধতিতে যুক্ত হওয়ার কারণে গত বছরও ২০২০-২১ সেশনের ক্লাস দুই মাস দেরিতে শুরু হয়েছিল। এ বছর ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশের প্রায় ছয় মাস হতে চললেও চূড়ান্ত ভর্তি এখনো শেষ করা সম্ভব হয়নি। গুচ্ছের অধীনে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল গত বছরের ৪ আগস্ট ‘এ’, ১৬ আগস্ট ‘বি’ এবং ২৩ আগস্ট ‘সি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ করা হয়। ভর্তি প্রক্রিয়ায় গত বছর থেকে এ বছর কিছু পরিবর্তন আনা হলেও কমেনি ভোগান্তি। বরং ভর্তির ভোগান্তি ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে পাঠদান শুরু করতে না পারায় সেশনজটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে। প্রাথমিকভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর চূড়ান্ত ভর্তি হতে প্রাথমিকভাবে ভর্তি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মূল মার্কশিট তুললে ভর্তি বাতিল হওয়াসহ চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন ভর্তিচ্ছুরা। এখন পর্যন্ত ১০ম মেরিট প্রকাশ করেও আসন পূর্ণ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত বছর করোনা থাকায় দেরিতে ক্লাস শুরু হয়েছিল। তবে ইউজিসি এ বছর জানুয়ারিতে ক্লাস শুরুর নির্দেশ দিলেও ক্লাস শুরু হচ্ছে না। সব বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস শুরুর তারিখ ঘোষণা করলেও ইবিতে এখনও ভর্তির তারিখ দেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা বলছেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন প্রক্রিয়ার কারণে এবং ধীরগতির চলমান প্রক্রিয়া হওয়ায় ক্লাস শুরু হতে দেরি হচ্ছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজটের শঙ্কা দও অতীতের সুনামসহ নিজস্বতা নষ্ট হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান অধ্য্রাপক ড. আহসান-উল-আম্বিয়া বলেন, গুচ্ছের সমন্বয়হীনতার কারণে জটিলতাগুলো তৈরি হয়েছে। যদি পরিকল্পনা করে সমানে আগাতো তাহলে এতো দীর্ঘ সময় লাগতো না। এটার কারণেই শেষের দিকে এসে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের মতো করে করেছে। ক্লাস শুরুর বিষয়ে আগামী সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) মিটিং এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে আলোচনা করেছি। সভাপতি দেশে ফিরলে সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এ বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) গুচ্ছতে না গেলে আমরাও যাব না। গুচ্ছ পদ্ধতির সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। ফলে সুফলের চেয়ে ভোগান্তি বেশি হচ্ছে। এছাড়া গুচ্ছের কারণে ভর্তির আগে সেশনজট হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, সোমবার (৩০ জানুয়ারি) মিটিংয়ে মতামতের ভিত্তিতে ক্লাস শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গুচ্ছ হলো কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত হয়। তাই গুচ্ছে থাকব কি না, সে বিষয়ে এখনই আগে থেকে কিছু না বলাই ভালো।