করমজলের কুমির রপ্তানিতে সম্ভাবনার হাতছানি

প্রকাশঃ ২০২৩-০১-০৯ - ১২:৫৪

মোংলা : পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজলের প্রজনন কেন্দ্রের কুমির রপ্তানির সম্ভাবনা বাড়ছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এই প্রজনন কেন্দ্রে জন্ম নেওয়া কুমিরই সুন্দরবনে কুমিরের বিলুপ্তি ঠেকাতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। ২০৬টি বড় কুমিরের বাচ্চা সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে। আরও ৫টি কুমির চট্টগ্রামের ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে এবং ৩টি পাঠানো হয়েছে ভোলায়। এখনো প্রজনন কেন্দ্রে ৪টি বড় কুমিরসহ ৯২টি বাচ্চা রয়েছে। এই প্রজনন কেন্দ্র থেকে কুমির বিদেশে রপ্তানির স্বপ্ন দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

বনবিভাগ-সূত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ সিডরে ভেসে গেছে ৭৫টি কুমির, বিভিন্ন কারণে কুমির মারা গেলেও চিতা বিড়াল মেরে ফেলেছে ৬২টি বাচ্চা। খাদ্যে পর্যাপ্ত বরাদ্দ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। তবুও প্রজনন বাড়ায় এই কেন্দ্রের কুমির রপ্তানির সম্ভাবনা বাড়ছে।

জানা যায়, সুন্দরবনের দুবলারচরে ১৯৯৭ সালে লবণ পানি প্রজাতির কুমির ধরা পড়ার পর স্বপ্ন দেখা শুরু করে বনবিভাগ। তারা তখন কুমিরের বংশ বৃদ্ধির প্রাথমিক কাজ শুরু করে। এরপর ২০০২ সালে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজলে ৮ একর বনাঞ্চলে কুমির প্রজনন কেন্দ্র চালু করে। বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই প্রজনন কেন্দ্রের জন্য সেসময় ব্যয় ধরা হয় ২৩ লাখ টাকা।

২০০২ সালে প্রজনন কেন্দ্রটি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলেও বাচ্চা দেয় তিন বছর পর ২০০৫ সালে। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সুপার সাইক্লোন সিডরে এই কেন্দ্রের ৭৫টি কুমিরকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এরইমধ্যে ২০৬টি বড় কুমিরের বাচ্চা সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও পাঁচটি কুমির চট্টগ্রামের ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে ও তিনটি পাঠানো হয় ভোলায়।

কুমির প্রজনন কেন্দ্র করমজলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, এই কেন্দ্রে বর্তমানে রোমিও ও আলেকজেন্ডার নামে দুইাট পুরুষ এবং জুলিয়েট ও পিলপিল নামের দুটি মা কুমির ও ৯২টি বাচ্চা কুমির রয়েছে। রোমিও-জুলিয়েটের বয়স এখন ৪০ বছর। নেই পর্যাপ্ত ওষুধ ও খাবারের সরকারি বরাদ্দ। লোকবলসহ এসব সংকট দূর হলে কুমির রক্ষায় এই কেন্দ্রটি আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে। এই প্রজনন কেন্দ্রে জন্ম নেওয়া কুমিরই সুন্দরবনে কুমিরের বিলুপ্তি ঠেকাতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

হাওলাদার আজাদ কবির আরো বলেন, খাদ্য বরাদ্দ, লোকবল ও চিকিৎসাসেবা বাড়ালে এ প্রজনন কেন্দ্র থেকেই কুমির রপ্তানি সম্ভব।