মো: নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠি : মহামারী করোনায় ভাল নেই ঝালকাঠির চাই-বুচনা প্রস্তুতকারীরা। এখানকার খালবিলে এখন আর আগেরমত মাছ মেলে না তার ওপরে এবছর পানি দেরিতে এসেছে তাই মাছ আরো কম। যে কারনে কমে গছে চাই বুচনার চাহিদা। যারা সারা বছর বর্ষ মৌসুমের অপেক্ষায় থাকে চাই-বুচনা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহের ব্যাবস্থা করার জন্য এ বছর তারা হতাশ। অর্থনৈতিক সংকটের কারনে মহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে বাঁশ সহ চাই বুচনা তৈরির উপকরন কিনেছিলেন বাজারে চাহিদা না থাকায় তারা যেমন বিপদে পরেছেন তেমনি ক্ষতির সন্মুখিন হচ্ছেন পাইকাররা বা মহাজনরা। এবছর মহামারী করোনায় এ সকল নিম্ম আয়ের মানুষ গুলো এখন চরম দুর্ভোগে অভাবে দিন কাটাচ্ছে।
ঝালকাঠি জেলায় কিছু লোক আছেন যারা দির্ঘ বছর ধরে বুচনা (এক ধরনের মাছ ধরার ফাঁদ) তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। নিজের পূঁজি না থাকায় মাহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে বাঁশসহ প্রয়োজনীয় উপকরন কিনে বুচনা তৈরি করেন। মহাজনরূপি পাইকাররা এজন্য বাজার মূল্যের চেয়ে কিছুটা কম দামে এসব বুচনা কিনে নেন। কিন্তু চিংড়ি, বেলে, পুঁটি, খলিসা, কই, শিং, ট্যাংরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশিয় মাছ আসংকাজনক ভাবে কমে গেছে। তার উপর বেশিরভাগ খাল-বিলে পলি পরে ভরাট হয়ে যাওয়া এবং পানি দেরিতে আসায় আগেরমত মাছের আনাগোনা নেই। কয়েক বছর আগেও বর্ষাকালে দক্ষিনাঞ্চলের নদী-নালা, খাল-বিল জলে টইটুম্বুর হয়ে গেলে জলের সংঙ্গে ভেসে বেড়াত হরেক রকমের মাছ। এসব মাছ শিকার করার জন্য অপেক্ষকৃত সহজ কৌশল চলাচলের পথে চাই কিম্বা বুচনা পেতে রাখা। কিন্তু এবছর মাছ না মেলায় যারা চাই বুচনা পেতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের আগ্রহ কমে গেছে। যে জন্য বাজারে এসব পন্যের চাহিদা এবং দাম দুটোই কম। আগে বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই জেলার হাট বাজার গুলোতে চাই বুচনা কেনার ধুম পরে যেত এ বছর তা নেই। জেলার কয়েকশ কারিগররা চোখে অন্ধকার দেখছেন। কিভাবে মহাজনদের দাদন পরিশোধ করবেন আর কিভাবে সারাবছর খেয়ে পরেবেঁচে থাকবের এমন চিন্তায়। তার উপরে দুর্যোগ করোনার হানায় চলছে অভাবের সংসার।