গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে বিয়ে করেও স্ত্রীকে অস্বীকার করার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। বিয়ে অস্বীকার করায় জুয়েল মোল্যা (২২) নামে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা এবং প্রতিকার চেয়ে মাদারীপুর পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী। ওই পুলিশ সদস্য বর্তমান মাদারীপুর পুলিশ লাইনে কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর কাশিয়ানী উপজেলার জোতকুরা গ্রামের আজাহার মোল্যার ছেলে জুয়েলের সাথে একই উপজেলার দেবাশুর গ্রামের সামচু মোল্যার মেয়ে সাইমা আক্তার সীমার ইসলামীক শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের সময় জুয়েলের পুলিশে চাকরি হওয়ার কথা হয় বলে রেজিষ্ট্রারি কাবিন নামা ছাড়াই উভয় পক্ষের অভিভাবকদের সম্মতিতে ইসলামীক শরীয়ত মোতাবেক তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। শর্ত অনুযায়ী বিয়ের সময় সাইমার পরিবার জুয়েলকে পুলিশের চাকরির জন্য ৩ লাখ টাকা দেয়। এরপর থেকে জুয়েল ও সাইমা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে উভয়ের বাড়ীতে বসবাস ও দৈহিক মেলামেশা করেন। এরই মধ্যে জুয়েল মোল্যার পুলিশের চাকরি হয়। কিছুদিন পর জুয়েল সাইমার আরো ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা দিতে সাইমা অপরাগতা প্রকাশ করলে হঠাৎ জুয়েল মোল্যা সাইমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। সাইমার পরিবারের লোকেরা জুয়েলের পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা নানা টালবাহানা করে।
বিয়ের কথা অস্বীকার করে জুয়েল মোল্যা বলেন, আমি সাইমাকে বিয়ে করিনি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হয়েও কোন ফল হয়নি। পরবর্তীতে ২৫ জুলাই বিচারের আশায় আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন গোপালগঞ্জ শাখায় অভিযোগ করেন সাইমা। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২৭/০৫/১৭ ইং তারিখে নোটিশের মাধ্যমে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে এক সালিশ হয়। এতে জুয়েল সাইমাকে বিয়ে, যৌতুক নেয়া এবং পুনরায় অন্যত্র বিয়ের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি ফাঁসি দড়িতে ঝুললেও সাইমাকে নিয়ে সংসার করবো না। এতে যদি আমার পুলিশের চাকরি চলেও যায় তাতে সমস্যা নেই।
সাইমা অবশেষে নিরুপায় হয়ে গোপালগঞ্জ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পুলিশ সদস্য জুয়েল মোল্যাসহ চারজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। সর্বশেষ সাইমাদের বাড়ীতে কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোক্তার হোসেন, উপজেলা পরিষদের সদস্য সোহরাফ হোসেন, পুইশুর ইউপি চেয়ারম্যান আলীউজ্জামান পানা মোল্যা ও বেথুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষিরোদ রঞ্জন বিশ্বাসসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এক শালিস বৈঠক হয়। এতেও কোন সমাধান হয়নি। সাইমা এখন সুষ্ঠ বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।