গ্রামবাসীর উদ্যোগে মনিরামপুরে দীর্ঘতম ভাসমান সেতু উদ্বোধন

প্রকাশঃ ২০১৮-০১-০৩ - ১১:২৪

রবিউল ইসলাম মিটু, যশোর : দেশের দীর্ঘতম ভাসমান সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। মনিরামপুর উপজেলার ঝাপা বাওড়ে দীর্ঘ পাঁচমাস ধারাবাহিক নির্মাণ কাজের পর মঙ্গলবার বিকালে অবশেষে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হলো যশোরের মণিরামপুরের ঝাঁপা বাঁওড়ে প্লাস্টিকের ড্রামের ওপর নির্মিত লোহার ভাসমান সেতুটি। মঙ্গলবার বিকেলে যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আশরাফ উদ্দিন ফলক উন্মোচন করে সেতুটি উদ্বোধন করেন।এরপর জেলা প্রশাসকসহ অতিথিরা পায়ে হেঁটে ভাসমান সেতুটি পার হন। এসময় মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান বারী, মণিরামপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হুসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ, চালুয়াহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ, ঝাঁপা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামছুল হক মন্টু, সেতু নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘ঝাঁপা গ্রাম উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’-এর সভাপতি মেহেদী হাসান টুটুল, সেতুর ডিজাইনার মাস্টার আসাদুজ্জামানসহ ফাউন্ডেশনের ৬০ উদ্যোক্তা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধন শেষে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনী অস্থায়ী ভাসমান সেতু তৈরি করে। পরে আবার সেটা উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু প্লাস্টিকের ড্রামের ওপর এতো বড় ভাসমান সেতু হতে পারে, তাও আবার বেসরকারি উদ্যোগে- এমনটি কোনোদিন দেখিনি বা শুনিনি। গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে এতবড় একটা কাজ করতে পেরেছেন সেই জন্য আমি উদ্যোক্তাসহ ঝাঁপা গ্রামবাসীকে সাধুবাদ জানাই।’ বাঁওড়ের ওপর স্থায়ী সেতু তৈরির ব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক। উদ্যোক্তারা সেতুটিকে ‘দেশের দীর্ঘতম ভাসমান সেতু’ বলে দাবি করছেন।
‘ঝাঁপা গ্রাম উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’-এর সভাপতি মেহেদী হাসান টুটুল বলেন, ভাসমান সেতুটি নির্মাণ করতে ৮৩৯টি প্লাস্টিকের ড্রাম, ৮০০ মণ লোহার অ্যাঙ্গেল পাত ও ২৫০টি লোহার শিট ব্যবহার করা হয়েছে। খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। আট ফুট চওড়া, একহাজার ফুট দীর্ঘ এই সেতুটি।
উল্লেখ্য. মণিরামপুরের দ্বীপসদৃশ ঝাঁপা গ্রামটি রাজগঞ্জ বাজারসহ উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। গ্রামটির তিন পাশ এই বাঁওড় ও একপাশ কপোতাক্ষ নদ দ্বারা বেষ্টিত। গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে নৌকায় চড়ে পাশের বড় মোকাম রাজগঞ্জ বাজারে আসতে হতো। শিক্ষার্থীরা নৌকা চেপে ঝুঁকি নিয়ে বাঁওড় পার হতো। গ্রামের ৬০ যুবকের উদ্যোগে ভাসমান সেতুটি নির্মিত হওয়ায় গ্রামবাসীর সেই কষ্ট লাঘব হতে চলেছে।
সেতু উদ্বোধনের আগে ঝাঁপা বাঁওড়ের পশ্চিম তীরে আলোচনা সভা হয়। এদিকে দৃষ্টিনন্দন ভাসমান সেতুটি উদ্বোধনের খবর পেয়ে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার লোক ঝাঁপা বাঁওড়ের দুই পাড়ে ভিড় জমান।