মো:নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠি : ঝালকাঠি পুলিশ লাইনে বিষপানে আত্মঘাতী নারী কনষ্টেবলের মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী পুলিশ কনষ্টেবল তরিকুল ইসলামকে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় গ্রেপ্তার করে আজ শনিবার আদালতে প্রেরণ করে বিকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৪ মে) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কনষ্টেবল নাদিয়া আফরিনের (২৮) মৃত্যু হলে তার পিতা বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে দন্ডবিধি ৩০৬ ধারায় ঝালকাঠি থানায় একটি মামলা দায়ের করে।তবে ঘটনার পরপরই আসামী পুলিশ হেফাজাতে থাকায় মামলা রুজুর সাথে সাথেই গ্রেফতার দেখানো হয়।
শুক্রবার সকাল থেকেই ঝালকাঠি থানা হেফাজতে থাকা নিহত নাদিয়ার স্বামী পুলিশ কনষ্টেবল তরিকুলকে শনিবার (১৬ মে) সকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) আবু তাহের মিয়া আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
অন্যদিকে তরিকুলের পিতা নলছিটি থানা পুলিশের ওয়ারলেস অপারেটর দেলোয়ার হোসেন দাবি করেছেন, ‘তার ছেলের সাথে ডিভোর্সের জন্য নিহত পুলিশ কনষ্টেবল মেয়েটির মা-ফুপুর অতিরিক্ত চাপ ও বিয়ের আগে অপর পুলিশ সদস্য ফরহাদের সাথে সম্পর্কসহ তাদের যৌথ ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার কারণেই মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। তার ছেলে তরিকুল নির্দোষ।’
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি খলিলুর রহমান বলেন, ঝালকাঠি সদর থানার একজন নারী পুলিশ সদস্য আত্মহত্যা করেছে। পারিবারিক কলেহের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্যের জেরে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছে। তবে নিহত নাদিয়ার বাবা বাদী হয়ে স্বামী পুলিশ কনষ্টেবল তরিকুল ইসলামর বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ মামলা রেকর্ড করে। মামলার আইও’র আবেদনে আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একমাত্র আসামি স্বামীকে দুই দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। আসামি নিহত নাদিয়ার স্বামী পুলিশ কনষ্টেবল তরিকুল এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
এ ব্যাপারে তরিকুলের পিতা পুলিশ সদস্য দেলোয়ার হোসেন জানান, তিনিসহ ৪ ভাই ও তার পুত্র ৫ জন পুলিশ বিভাগে কর্মরত থাকলেও ছেলে তরিকুলের বিয়ের ব্যাপারে তারা কিছুই জানতেন না। তার ছেলে পূর্বেই বিবাহিত থাকায় প্রথম স্ত্রী পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দেয়ার পর তারা এই বিয়ে সম্পর্কে জানতে পারেন। তারা যতোটুকু জেনেছেন- নিহত নাদিয়াকে তার পরিবার তরিকুলকে তালাক দেয়ার জন্য ভীষণ চাপ দিয়ে আসছিল। এরমধ্যে পরকিয়া প্রেমিক ফরহাদের কাছে থাকা কিছু ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে নাদিয়া ও তরিকুলকে ব্লাকমেইলসহ বিভিন্ন সময় টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরেও ফেসবুকে সেই ছবি ছড়িয়ে দেয়ায় আত্মসম্মানের জন্য সে (নাদিয়া) এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ ব্যাপারে তার পুত্র পুলিশ বিভাগের সদস্য তরিকুল ইসলাম একেবারেই নির্দোষ বলে দাবি তার।