মো:নজরুল ইসলাম,ঝালকাঠি : ঝালকাঠিতে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলতি বছরে গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশত অবৈধ ইটের পাজা। প্রশাসন নিরব ভূমিকার নেপথ্যে রয়েছে স্ব-ঘোষিত তৈরি করা একটি ফান্ড । ওই ফান্ডে টাকা জমা দিলেই সব বৈধ বলে একটু সুত্র জানিয়েছেন। এসকল পাজায় ব্যবহার করা হচ্ছে জ্বালানী কাট সহ হাজার হাজার মণ বিভিন্ন প্রকার দেশীয় জ্বালানী কাঠ। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুগুলী দেখিয়ে কৃষি জমিতেই এক শ্রেণীর প্রভাবশালীরা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এসব ইটভাটা ও পাজা অনেকটা বাঁধাহীনভাবেই নির্মাণ করে চলছে। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও প্রভাবশালীদের অর্থনৈতিক সুবিধা প্রদান করেই তৈরী করা হচ্ছে শহর সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ্য ইটের পাজা। অপরদিকে সম্প্রতি স্থানীয় সচেতন মহল ক্ষোভে ফুঁসে উঠলে এবং লিখিত অভিযোগ দিলেও প্রশাসনের লোক দেখানো ভ্রম্যমান অভিযানে দু একটা পাজায় মাত্র ৫০০০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এবং পুণরায় ওই অভৈধ পাজা আরো গর্জে উঠে চলছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় অর্ধশত অবৈধ ইটের পাজা চললেও প্রশাসন নিরব ভূমিকার নেপথ্যে কি প্রশ্ন সচেতন মহলে।
অবৈধ ইট পাজার মালিকরা ফসলি জমি দখল করে প্রতি বছর নানা অজুহাতে ইট পুড়িয়ে পরিবেশের ক্ষতি করে আসলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়না তেমন কোন উদ্যোগ। এর নেপথ্যে রয়েছে প্রশাসনের এল আর ফান্ড বলে অভিযোগে জানাগেছে। এ অবৈধ ড্রামচিন্মি দিয়ে তৈরি করা ইটেরবাটা ও পাজা ব্যাবসায়ীরা প্রশাসনের ঐ এলআর ফান্ডে তাদের চাহিদা মত অর্থ জমা দিয়ে বুক ফুলিয়ে প্রকাশ্যে এ অবৈধ ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা বন কর্মকর্তাদের চারপাশে ঘিরে থাকা কিছু অসাধু কর্মচারী ওই সকল অবৈধ ইটভাটার মালিকদের নিকট প্রশাসনের নাম ভঙ্গিয়ে মাসোয়ারা গ্রহণ করে প্রতিবছর ইট পোড়ানোর কাজে উৎসাহ দিয়ে আসছে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় সচেতন মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া।
সচেতন মহলের দাবি ইটভাটার নির্গত ধোঁয়ায় বায়ু দূষিত হয়ে নানা রোগ ব্যাধিসহ কৃষিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৮৯ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী সংরক্ষিত বনাঞ্চলের তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোন ধরণের ইটের ভাটা বা পাজা স্থাপন করা যাবে না। এর বাইরে করতে হলে আইনের সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে করতে হবে।
যেমন ভাটায় ১২০ ফুট উচ্চতার ধোঁয়া নির্গমনের চুল্লি স্থাপন করা বাধ্যতামূলক হলেও তার কোন বালাই নেই। বিধি নিষেধ রয়েছে জনবহুল এলাকা বা ফসলি জমিতে ইট ভাটা নির্মাণের। ইট পোড়াতে দেশী বা বনজ কোন ধরণের কাঠ ব্যাবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকলেও বাঁধ বিচার ছাড়াই বিভিন্ন প্রজাতির বনজ গাছ কর্তন করে যাচ্ছে।
এসবের তোয়াক্কা না করে ঝালকাঠি জেলার বিভিন্ন গ্রামে এক শ্রেণীর প্রভাবশালীরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে ইট পোড়াচ্ছেন।
এ ছাড়া দেশী কাঠেরও বেশি মূল্য দেয়ায় দরিদ্র লোকেরা ছোটবড় গাছ নির্বিচারে কেটে বিক্রি করছে। ফলে উজাড় হচ্ছে বনজ ও স্থানীয় গাছপালা। বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবেশ। চলতি বছরে একমাত্র ঝালকাঠি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ইট পোড়ানোর জন্য অর্ধশত ইট ভাটার পাজা স্থাপন করা হয়েছে ঘন বসতি এলাকাসহ ফসলি জমিতে।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপকালে জানায়, আমরা গতদিন বিকনা এলাকার বেশ কয়েকটি অবৈধ ইটের পাজায় অভিযান পরিচালনা করে আর্থিক জরিমানা করেছি। পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ ইটের বাটা ও পাজায় অভিযান অব্যহত থাকবে।#