মো:নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠি : ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আ’লীগনেতা মোঃ এমাদুলহক মনির কর্তৃক প্রথম ধর্ষনের দিন থেকে ৩ বছর ধরে চালানো প্রতারনা ও যৌননির্যাতনের সুনির্র্দিৃষ্ট ফিরিস্তি তুলে ধরে ধর্ষিতা তরুনী এক সংবাদ সম্মেলন করলে খুলে গেছে মনিরের অপকর্মের প্যান্ডার বাক্স। ৩০ আগষ্ট রবিবার সকাল ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত ধর্ষন মামলার বাদী মিতু আক্তার দোলা এক জনাকীর্ন সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা চেয়ারম্যান মনির ও তার সকল অপকর্মের সহযোগী কথিত পিএস মিঠু সিকদারের সকল কার্যকলাপের বর্ননা ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এদিকে ঝঅলকাঠি জেলা জুড়ে আলোচনা ও প্রশ্ন নারী লুভী উপজেলা চেয়ারম্যানের লালশার শিকার ধর্ষিতা যুবতী ন্যায় বিচার পাবে কি?
এর আগের দিন শনিবার সকাল ১১টায় ধর্ষন মামলার হওয়ার ৪দিন পর কাঠালিয়া আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরের পক্ষে পছন্দসই কতিপয় সাংবাদিক নিয়ে এক প্যাকেজ সংবাদ সম্মেলনে করলে শুধু ধর্ষিতা তরুনী ও তার পিতার বিরুদ্ধে সীমাহীন বিষোধগার করেন। তবে বরিশালে মিঠুর বাসায়সহ তরুনী মিতুকে নিয়ে দেখা-সাক্ষাৎ-রাত্রীযাপন, গত জানুয়ারীতে একজন উপজেলা চেয়ারম্যান বিয়ে করলেও তার দলীয় নেতাকর্মীসহ আত্মীয় স্বজনকে গোপন করা এবং গত ১৯ আগষ্ট বরিশালের এড. সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ সাজুর চেম্বারে মনির-মিঠুর উপস্থিতিতে আপোষ বৈঠকের বিষয়গুলো সম্পূর্ন এড়িয়ে যাওয়ায় নানারকম আলোচনা-সমালোচানা সৃষ্টি হয়েছে।
ধর্ষিতার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০১৭ সালে তৎকালীন কাঁঠালিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা এমাদুল হক মনিরের সাথে চাকুরী সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কলেজ পড়ুয়া এ তরুনীর সাথে তার প্রথম পরিচয় ও পরবর্তীতে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন সময় কথোপকথনের এক পর্যায়ে প্রেমেরে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিগত ৩ এপ্রিল ২০১৭ তারিখ চাকুরির তদবিরের কথা বলে মনির তাকে বরিশাল নিয়ে আসে ও বরিশাল শহরের বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে তার মহিলা কলেজ সড়কের আগরপুর রোডস্থ গনিষ্ট বন্ধু আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের অধিবাসী মিঠু সিকদারের ভাড়া বাসায় নিয়ে গেলে সেটা একটা ব্যাচেলর বাসা বুঝতে পারেন। মিতু সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে মনির নানারকম তালবাহানা করে জোরপূর্বক সেখানে অবস্থান করে এবং রাত ১১টার দিকে মিঠুকে খাবার আনতে বাইরে পাঠিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। তখন সে কান্নাকাটি করলে এমাদুল হক মনির ফোন করে বন্ধু মিঠুকে একজন কাজী নিয়ে আসতে বললে সে কিছু সময় পর একজন হুজুর নিয়ে এসে এবং কিছু কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে বলে বিশ্বাস করিয়ে সেখানে দুই দিন রেখে স্বামী-স্ত্রীর ন্যায় মেলামেশা করে। এভাবে তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরের বিভিন্ন সময় বরিশাল শহরের আগরপুর রোডে বন্ধু মিঠুর ভাড়া বাসায়, তাদের গ্রামের বাড়ীতে, আমুয়া বাজারে ৫তলা বিল্ডিংয়ে, কখোন বরিশাল থেকে লঞ্চযোগে কেবিনে ঢাকা নিয়ে ও ঢাকা আবাসিক হোেেটল স্বামী-স্ত্রীর নিয়ে নিয়মিত যৌনসম্পার্ক চালিয়ে আসে। এক পর্যায়ে আমি বিয়ের কাগজপত্রের জন্য চাপ দিলে ‘সে সামনে উপজেলা নির্বাচন তাই এখোন আমাদের বিয়ের কথা প্রকাশ করা যাবেনা নির্বাচনের পর সামাজিক ভাবে বিয়ে সম্পন্ন করবে’ জানালে আমি নিরব থাকি।
সংবাদ সম্মেলনে মিতু আক্তার দোলা আরো বলেন, গত ১আগষ্ট ২০২০ইং তারিখ মিতু ও তার মাসহ ১ ও ২নং স্বাক্ষীকে নিয়ে বরিশাল মিঠু সিকদারের বাসার সামনে আসলে নীচে রাস্তায় দাড়িয়ে মনির জানায় মিঠু বাসায় নেই বিয়ের কাগজপত্র তার কাছে এবং আমাদের সেখানে দাড় করিয়ে কৌশলে চলে যায়। আমরা খুজতে গিয়ে বরিশাল শহরের সোবাহান কমপ্লেক্সে মিঠু সিকদারের দোকানের সামনে গেলে সেখানে দাড়ানো মনির আমাদের দেখে খারাপ ব্যবহার করে এবং কোন বিয়ে সাদি হয়নি তোরা যা পরো করিস বলে চলে যায়। আমরা উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা এমাদুল হক মনিরের হাতপা ধরে অনেক কান্নাকাটি করলেও সে আমাকে শারীরিক ভাগে ভোগ ও আনন্দফুর্তি করে ছুড়ে ফেলায় আইনের আশ্রয় নেয়া ছাড়া আর কোন পথ খোলা ছিলনা। এক পর্যায়ে আমাদের মিমাংশার প্রস্তাব দিয়ে গত ১৯ আগষ্ট সকাল আনুমানিক ১১টায় বরিশালের এড. সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ সাজুর চেম্বারে ডাকলে আমি আমার মাকে নিয়ে সেখানে গেলে উপজেলা চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির ও তার সকল অপকর্মের সহযোগী মিঠু সিকদারও সেখানে আসে কিন্তু কোন আপোশ মিমাংসা না করে আসামীরা সেখান থেকে চলে যায়। আমি স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেয়ে গত ২৫ আগষ্ট বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতেএমপি মামলা (নং-১০৬/২০২০ইং) দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দেয়ার জন্য কোতয়ালী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওই তরুনী ও তার মা নাজমা বেগম অভিযোগ করেন, মামলা দায়েরের পর থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের গ্রামের বাড়ী গিয়ে কতিপয় স্বাক্ষীকে তদন্তকরী কর্মকর্তার কাছে সত্য প্রকাশ করলে এলাকা থেকে বিতাড়িত করাসহ খুন-জখম, মিথ্যা মামলা হামলা করার হুমকি দিয়ে আসছে। আমাদের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে মামলা তুলে না নিলে এসিড মারা ও মা-মেয়েকে অপহরন করে খুন করিয়া লাশ গুম করার, বাড়ীঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়ার ও বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় মামলা দিয়ে জীবনের তরে জেল হাজতে প্রেরনে হুমকি দিচ্ছে। তাদের ভয়ে এখোন বাড়ী ঘর ছাড়া হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও জননেতা আলহাজ্ব আমির হোসেন আমুর কাছে সহায়তার আবেদন করেছেন।
অপরদিকে মনির এক সংবাদ সম্মেল করে ওই তরুনীর পিতার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট কথা বলে যা সত্য নয় । বলেও দাবঅ করেন।