মো:নজরুল ইসলাম,ঝালকাঠি : ঝালকাঠির বাসন্ডা ইউনিয়নের আগরবাড়ি গ্রামের ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রী লিজা আক্তারের (১২) নিজ ঘর থেকে ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা পর্যন্ত লিজা মায়ের সাথে পার্শবর্তী বিয়ে বাড়িতে কাজ করে বাড়ি ফেরার পর রাত ১টায় তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। পরে প্রতিবেশীরা মৃতদেহ নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে পুলিশে খবর দেয়। হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। লিজার আশা ছিল বৃহস্পতিবার বিয়ে বাড়িতে মায়ের সাথে কাজ করে শুক্রবার দুপুরে বিয়ে খেতে যাবে। কিন্তু তার সে ইচ্ছা আর পূরন হলোনা। তাই বিয়ে বাড়ীতে যাবার জামা কাপড় ঘরের বাড়ান্দার বিছানায় পরে ছিল। রাত ১ টার দিকে বড় বোন বাক প্রতিবন্দী নাসরিন ঘরে এসে আড়ার সাথে ছোট বোন লিজার ঝুলন্ত লাশ দেখে ভয়ে চিৎকার শুরু করে। এ খবর শুনে বিয়ে বাড়ির কাজ ফেলে মা এবং প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। রহস্যজনক এই মৃত্যুর বিষয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহষ পাচ্ছেনা। তবে বাড়ী থেকে লিজার মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসা ভ্যান চালক স্বপন মিয়া জানান, আমি খবর পেয়ে যখন লিজার মৃতদেহ আনতে যাই তখন স্থানীয়দের মুখে শুনতে পাই লিজাকে ধর্ষন করা হয়েছে। গ্রামের গৃহবধু মাহ্মুদা বেগম বলেন, গত বৃহস্পবিার রাত ১১ টা পর্যন্ত লিজা তার বাক প্রতিবন্ধী বড় বোন নাসরিন ও তার মা সেলিনাকে বিয়ে বাড়ির পাকের ঘরে কাজ করতে দেখেছি। এরপর সকালে শুনতে পাই ঘরের ভিতরে লিজার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে। এটা কিছুতেই হতে পারেনা। তার বড় বোন বাক প্রতিবন্ধী হলেও লিজা ছিল শান্ত এবং স্বাভাবিক। হাসপাতালে লিজার মৃতদেহের সাথে থাকা নিকট আত্মিয় রোকেয়া বেগম বলেন, আমাদের সন্দেহ এলাকার কোন বখাটে ছেলেরা ধর্ষন করে এ ঘটনা ঘটাতে পারে। লিজার দুই কাঁধে কালো দাগ দেখেছি। এ বিষয়ে লিজার মা সেলিনা বেগম জানান, আমার স্বামী জাহাঙ্গির মৃধা ঢাকায় থাকে। আমার মেয়ে লিজা আগর বাড়ি স্কুলে চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ত। সেখান থেকে এনে মাদ্রাসায় ভর্তি করেছি। লিজার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী বা সন্দেহ করেন কিনা জানতে চাইলে মা সেলিনা বেগম বলেন, আমার বাড়িতে থাকতে হবে। মেয়েকে কে বা কারা মারছে আমি জানিনা। এ বিষয়ে এর বেশী কিছু সে বলেনি। এ প্রসঙ্গে ঝালকাঠি সদর থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, লিজার লাশ গলায় ওড়নার প্যাচ লাগিয়ে তাদের বসত ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করা হয়েছে। ময়না তদন্ত হবে। ঘটনার পিছনে কি মোটিভ আছে আমরা তদন্ত করে দেখছি। এ বিষয়ে ঝালকাঠি থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।