মো:নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠি: ঝালকাঠি জেলায় এলজিইডির আওতাধীন আয়রন ব্রীজগুলো একের পর এক ভেঙ্গে গিয়ে গ্রামীন যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। জেলার মোট ৪শ’ আয়রন ব্রীজের ২১৪ টিই ব্যবহার অনুপযেগী। এগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধশত বিদ্ধস্ত। এরমধ্যে সিডরে বিদ্ধস্ত ব্রীজ ও রয়েছে। ১৯৯৫ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে নির্মিত এসব ব্রীজ সংস্কার কিম্বা প্রতিস্থাপন না করায় এ পরিস্থিতির সৃস্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ জানিয়েছে ব্রিজগুলো পুনর্বাসনের জন্য মন্ত্রনালয়ে বরাদ্দ চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পোনাবালিয়া খালের ওপর অবস্থিত দুই ইউনিয়নের সংযোগ রক্ষাকারি এই ব্রীজটি ২০০৭ সালের সুপার সাইক্লোন সিডরে বিদ্ধস্থ হয় (ফুটেজ-১ এর প্রথম ব্রীজ)। এর পরে ভাঙ্গা অংশে স্থানীয়রা বাঁশ এবং সুপারি গাছ দিয়ে যোগাযোগ সচল রেখেছে। জেলায় বিভিন্ন সময় বিধ্বস্ত এধরনের ব্রীজের সংখ্য অন্তত ৫০টি। নড়বড়ে ব্যবহার অনুপযোগী ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজ রয়েছে আরো ১৬৪টি। এসব ব্রীজের ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল তো দুরে থাক শিশু এবং বৃদ্ধরাও চলাচল করতে পারে না। কোথাও বিকল্প ব্যবস্থায় নৌকায় আবার কোথাও ঝুঁকি নিয়ে লোকজন যাতায়াত করছে। স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াত রোগী এবং পন্য আনানেয়া করা কষ্টসাধ্য হয়ে পরেছে, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। ঝালকাঠি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর জানান, ১৯৯৫ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত জেলায় ৪০০টি আয়রন ব্রীজ নির্মান করা হয়। এরমধ্যে সরকারি-বেসরকারি সহায়তায় কয়েকটি সড়ক সংস্কার করা হলেও সিডরে বিধ্বস্ত ২০টি সেতু ১০ বছরেও সংস্কার কিংবা পুননির্মান করা হয়নি। এসব সেতুর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো নলছিটির টেকেরহাট-পোনাবালিয়া সংযোগ সেতু, নাচনমহল-রানাপাশা সংযোগ সেতু, সরমহল-পুনিহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন সেতু। ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট আমুয়া হাসপাতালে যাতায়াতের প্রধান সড়কে অবস্থিত আমুয়া খালের ওপর অবস্থিত আয়রন ব্রিজটির মাঝের অংশ প্রায় দেড় বছর আগে বালিভর্তি কার্গোর ধাক্কায় ভেঙে যায়। এরপর থেকে হাসপাতাল এবং খালের দুই পাড়ের স্কুল-কলেজ ও হাটবাজারে যেতে হচ্ছে নৌকায় করে। বন্ধ হয়ে গেছে অ্যাম্বুলেন্সে রোগী আনা-নেয়া। ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় ট্রলারের ধাক্কায় আমুয়া ছোনাউটা এলাকার চান্দের খালের ওপর আয়রন ব্রিজটি ভেঙে খালে পড়ে আছে। একইভাবে ঝালকাঠি সদর ও রাজাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য ব্রীজ ভেঙে থাকলেও নেই কোন সংস্কারের উদ্যোগ।
দীর্ঘদিন ধরে ব্রীজগুলো ভেঙে থাকলেও সংস্কার বা পুননির্মানের কোন উদ্যোগ নেই, ফলে সাধারন মানুষ ও স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। জেলার এসব ব্রীজ দ্রুত পুননির্মান করে তৃনমূল মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল হবে এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।
এদিকে ঝালকাঠি এলজিইডির সিনিয়র সহকারি প্রকৌশলী মোঃ ফুলকাম বাদশাহ দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে এলজিইডির কর্মকর্তা জানালেন এগুলোর মধ্যে ২১৪টি প্রতিস্থাপনের জন্য ২৩৪ কোটি টাকা বড়াদ্দ চেয়ে মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।