ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে গত ১৪ ডিসেম্বর জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে আব্দুল কাদের নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সামসুল বাদি হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
এদিকে মামলা দায়েরের পর থেকেই পলাতক রয়েছে বিবাদী সৈয়দ আলীর পরিবার। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাদি পক্ষের লোকজন সৈয়দ আলীর বাড়ীর মালামাল,গরু-ছাগল,হাঁস-মুরগি,ক্ষেতের ধান,খড়ের পুজ,শ্যালো মেশিনসহ বিভিন্ন মালামাল লুটের অভিযোগে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে ২১ জনকে আসামী করে একটি মামলা করেছে বিবাদির বোন কামরুন নাহার।
মামলা সুত্রে জানা যায়, সৈয়দ আলীর বাড়ীতে রক্ষিত ৩ একর জমির ধানের পুজির ১৫০ মন ধান, বাড়ীর পশ্চিমপার্শ্বের পুকুরের ৫/৬ মন মাছ, বাড়ীতে পোষা ১০টি ছাগল, ৫০টি মুরগী, ব্যবহৃত দুটি বাইসাইকেল, একটি চায়না ৪ হর্সের ওয়াটার কুলার শ্যালো মেশিন, ২০টি হাঁস সহ বাড়ীর অন্যান্য ব্যবহৃত মালামাল লুট করে নিয়ে যায় মামলায় উল্লেখিত তোজাম্মেল ও তৌহিদুর সহ ২১জন আসামী। যার আনুমানিক বাজার মূল্য সাড়ে তিন লক্ষ টাকা।
সরেজমিনে সংবাদকর্মীরা দক্ষিণ ভেলাজানের সৈয়দ আলীর বাড়ীতে গেলে দেখা যায়, লোকজন না থাকায় শুন্য বাড়ীটি খা খা করছে। এছাড়াও অভিযোগে উল্লেখিত মালামাল লুটের সত্যতাও পাওয়া যায়। এসময় পার্শ্ববর্তী বাড়ীর লোকদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে কেউই মুখ খুলতে রাজি হয়নি। তবে সৈয়দ আলীর মেয়ে এলিজা জানায়, আসামীরা যখন মালামাল লুট করে সেসময় এলাকাবাসি বাঁধা প্রদান করতে গেলে তাদের শাসিয়ে বলে “যে এখানে বাঁধা দিতে আসবে তাকেই হত্যা মামলার আসামী করা হবে”। ফলে তাদের কেউই বাঁধা প্রদান করতে পারেনি। একই ঘটনা ঘটেছে আপনারা যখন আমাদের বাসায় যান, তখন কেউ যাতে মুখ না খোলে সেজন্য তাদের পাহাড়া দিয়ে রেখেছিল আসামীর আত্মীয়-স্বজন। এছাড়াও বাসায় খাওয়ার জন্য মজুত রাখা সাড়ে তিন মণ চাল লুট ও বাঁশ ঝাড়ের সমস্ত বাঁশ কেঁটে নিয়ে যায় বিরোধী পক্ষরা।
এ ব্যাপারে ঐ ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জিয়ারুল হক বলেন, জমির বিরোধে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়।এতে মামলার বিবাদি সৈয়দ আলী আতঙ্কে পরিবার সহ পালিয়ে যায়।আমরা পরিষদের পক্ষ থেকে ১৪-২০ তারিখ পর্যন্ত রাতে চৌকিদার দিয়ে বাড়ির মালামাল পাহাড়া দিয়ে রেখেছিলাম।কিন্তু পাহাড়া উঠিয়ে নিলে বাড়ি-ঘর লুট করা হয়।তবে পরিষদে ১২টি গরু হেফাজতে রাখা আছে।মালিক আসলেই তা ফেরৎ দেওয়া হবে।
অপরদিকে নিহতের পরিবার সৈয়দ আলীর বাড়ী-ঘর ও মালামাল লুট-পাটের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে চিলারং ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,জমির বিরোধে একজন নিহত হওয়ায় নিহতের পরিবার একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।তবে আসামীরা পলাতক রয়েছে।এছাড়া বাসায় কেউ না থাকায় বিবাদি সৈয়দ আলীর ১২টি গরু ও কিছু ধান পরিষদে জমা আছে।এগুলোর মালিক আসলেই তা ফেরত দেওয়া হবে।তবে সৈয়দ আলীর বাড়ী-ঘর ও মালামাল লুটপাটের বিষয়ে তিনি অবগত নন।