ডুমুরিয়ায় নিরাপত্তা হীনতায় শিক্ষক পরিবার

প্রকাশঃ ২০২১-০৬-০৮ - ১৬:৩৫

সুজিত মল্লিক, ডুমুরিয়া (খুলনা) : ধার করা টাকার সুদ-আসল পরিশোধ করেও এক শিক্ষক পাওনাদেরর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। তাকে তুলে নিয়ে মারপিট করে জোর পূর্বক সাদা ষ্টাম্পে সহি নিয়েছেন সেই পাওনাদার ও তার সহযোগীরা। ঘটনাটি ঘটে গত ৩০ এপ্রিল উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়নের বসুন্দিয়া ডাঙ্গা গ্রামে। বর্তমানে ওই শিক্ষক ও তার পরিবার নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক পংকজ কুমার কুন্ডু বলেন, প্রায় ৪বছর পূর্বে আমার টাকার প্রয়োজন হলে সাহস ইউনিয়নের কাগজিপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদ শেখের ছেলে আনোয়ার হোসেন চান্নুর নিকট থেকে দেড় লাখ টাকা ধার গ্রহন করি। ধারের শর্ত মতে আমি তাকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা প্রদান করি। আজ পর্যন্ত আমি তাকে ৩লাখ টাকা দিয়েছি। এরপরও সে আমার নিকট টাকা দাবি করে আসছে। কিন্তু আমি তাকে আর কোন টাকা দিতে না চাইলে সে আমার ওপর হুমকি-ধামকি অব্যাহত রাখে। এক পর্যায়ে গত ৩০ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আনোয়ার হোসেন চান্নু ও তার সহযোগী কালিকাপুর গ্রামের সাহাবুদ্দিন গাজী আমার বাড়িতে হাজির হয়ে আমাকে খুঁজতে থাকে এবং আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে থাকে। তখন আমি তাদের ভয়ে দৌড়ে প্রতিবেশী শওকত মোড়লের বাড়িতে গিয়ে লুকিয়ে পড়ি। কিন্তু তাতেও আমার রক্ষা হয়নি। তাদের ঘর থেকে টেনে-হিছড়ে ধরে এনে উঠানে ফেলে আমার স্ত্রী ও সন্তানদের সামনে বেদম মারপিট করে মোটর সাইকেলে তুলে নিয়ে নোয়াকাঠি গ্রামের হাফিজ সরদারের বাড়িতে। আর সেখানেই ফেলে আনোয়ার হোসেন চান্নু, সাহাবুদ্দিন গাজী ও হাফিজ সরদার এই তিনজন মিলে এক’শ টাকা মূল্যের তিনটি সাদা স্টাম্পে জোর পূর্বক সহি করে নেয়। সেই থেকে তারা আমার ওপর হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। বর্তমানে আমি তাদের ভয়ে বাড়ি থাকতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অবিহিত করেছি এবং তাদের পরামর্শ অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেন চান্নু বলেন, মাস্টার পংকজ বাবু আমার নিকট থেকে দেড় টাকা নিয়ে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা দিয়েছে। আমি টাকা চাইলে সে নানা অজুহাত তুলে ধরে। এক পর্যায়ে সে আমার সাথে দেখা করাই বন্ধ করে দেয়। তাই তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে স্টাম্পে সহি করিয়ে ছিলাম এবং পরে সে স্টাম্প তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেখ ফিরোজ আহমেদ বলেন, টাকা-পয়সা নিয়ে লেনদেনে সমস্যা হতেই পারে। তারপরও একজন শিক্ষককে তুলে নিয়ে প্রকাশ্যে মারপিট করা মোটেও ঠিক হয়নি। এটা একটা অমানবিক কাজ বলে আমি মনে করি।
বিষয়টি নিয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবদুল ওয়াদুদ বলেন, টাকা-পয়সা নিয়ে শিক্ষকের সাথে খারাপ আচারণের ঘটনায় একটি আবেদনপত্র দেওয়া হয়েছে। আমি সয়ম সুযোগ মত তাদেরকে ডেকে শুনানি শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।