ডুমুরিয়ায় বৃদ্ধি পেয়েছে জোয়ারের পানি : হুমকিতে রক্ষাবাঁধ

প্রকাশঃ ২০২১-০৫-২৬ - ২০:২৬

সুজিত মল্লিক, ডুমুরিয়া (খুলনা) : ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ডুমুরিয়ায় প্রচন্ড আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে জোয়ারের পানি। চরাঞ্চল ও নদীর তীরের রক্ষাবাঁধ গুলো রয়েছে হুমকির মুখে। পানির প্রভাবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা হয়েছে নিমর্জ্জিত।
জানা গেছে, অতি প্রবল ঘুর্ণিঝড় ইয়াস আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করায় দেশের উপকুলীয় অঞ্চল জুড়েই বিরাজ করছিল ছিল বিপদ সীমা। সেদিক দিয়ে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলাও ছিল হুমকির মুখে। তবে ঘুর্ণিঝড় ঘণিভূত হয়ে ভারতের পশ্চিম-বঙ্গ ও উড়িষ্য দিকে অগ্রসর হওয়ায় পরিস্থিতিটা ছিল কিছুটা বিপদমুক্ত। তারপরও মঙ্গলবার থেকে দুইদিন ব্যাপি প্রবাহিত হয় ঝড়োবাতাস। তবে উপজেলার অভ্যন্তরীন নদী গুলোতে অস্বাভাবিক হারে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রভাবে হুমকিতে রয়েছে সাহস ইউনিয়নের লতাবুনিয়া বাশতলা, চটচটিয়া, শোভনা ইউনিয়নের বাগআচড়া বাদুরগাছা, কদমতলা, বারুইকাঠি, পাতিবুনিয়া, জিয়ালতলা, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়নের আবাসন, জাবড়া, তেলিখালি, ধানিবুনিয়া বকুলতলা, শরাফপুর ইউনিয়নের চাঁদগড় জালিয়াখালী, আসাননগর, মাগুরখালীর শিবনগর, খোরেরাবাদ, আটলিয়ার বরাতিয়া, কুলবাড়িয়া, খর্ণিয়ার রাজার সংলগ্ন এলাকা ও রানাই গ্রাম অঞ্চল, রুদাঘরার শোলগাতিয়া, চহেড়ার গেট ও ডুমুরিয়া সদরের ট্রলারঘাট এলাকা। এরমধ্যে উপজেলা সদরের আইতলা জেলেপল্লী, ট্রলারঘাট এলাকায় জোয়ারের পানি ওঠানামা করছে। এ বিষয়ে ভান্ডারপাড়া আবাসন পল্লীর অবস্থা নিয়ে ইউপি সদস্য শেখ মাহাবুর রহমান বলেন, গত ২/৩ দিন ধরে নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয় লোকজন নিয়ে বাঁধ দিয়ে কোন রকমে পানি আটকাতে পেরেছি। তবে পারাপারের জন্য বাঁশের শাকোটি পানির তোড়ে ভেসে গেছে। শোভনার বাদুরগাছা-বাগআচড়া নিয়ে ইউপি সদস্য দেবব্রত সরদার বলেন, এখানকার রক্ষাবাঁধের অবস্থা খুবই খারাপ। যেকোন সময় বাঁধ ভেসে যেতে পারে। শরাফপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলাম রবি বলেন, ইউনিয়নের চাঁদগড়, জালিয়াখালি, বৃত্তিবিড়ালা, আসাননগর এলাকার অবস্থা মোটেই ভালো না। বাঁধ ছুই ছুই জোয়ারের পানি। রুদাঘরার চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোস্তফা কামাল খোকন বলেন, ইউনিয়নের চহেড়া স্লাইচ গেট ও শোলগাতিয়া বাজারে সংলগ্ন এলাকা হুমকিতে রয়েছে। বিশেষ করে চহেড়ার গেটে কিছু হলে চরম বিপদ হয়ে যাবে।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা ত্রাণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ণ কর্মকর্তা মোঃ আশরাফ হোসেন বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে আমরা উপজেলার সকল সাইক্লোন সেন্টারে মানুষের আশ্রয়ের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে দুর্যোগ কবলিত মানুষরা অবস্থান করবে।
এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ইয়াসের প্রভাবে ডুমুরিয়া উপজেলার কোথাও তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে উপজেলার অভ্যন্তরীন নদী গুলোতে জোয়ারের পানির প্রচন্ড চাপ। আমরা স্ব-স্ব এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থেকে কাজ করতে বলেছি। আর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকা পরির্দশন করে তাৎক্ষণিক ভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে এখানে ঝড়োবাতাস হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত বড় আকারে ঝড়ের খবর পাওয়া যায়নি। বৃষ্টিও হচ্ছে থেমে থেমে। তবে নদীর জোয়ারের পানি বেড়েছে অনেক বেশি। বিশেষ করে নদীর চর ও অপদার বাহিরে বসবাস করা মানুষের অবস্থা মোটেও ভালো না।