ঝালকাঠি :: দেশে সুস্থ্যধারার গণমাধ্যম কায়েম করতে দেশবাসির সহযোগিতা চাইলেন দেশের শীর্ষ সাংবাদিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)’। মহান ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে সকাল ৭টায় ঝালকাঠি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞলী জানানো শেষে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় দেশবাসির নিকট এই দাবী করেন। তিনি বলেন, দেশে নানাভাবে সাংবাদিকদের নির্যাতন ও হয়রাণী করা হচ্ছে। গণমাধ্যমকে কোনঠাসা করে উন্নয়ন আশা করা যায়না। সরকারকে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের জীবনমান উন্নয়নে নজর রাখা উচিত। দেশ প্রতিষ্ঠার পর এ যাবৎকাল কোন সরকার গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের জীবনমান উন্নয়নে পদক্ষেপই গ্রহন করেননি। সকল রাজনৈতিক দল সরকারে ক্ষমতা থাকাকালে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদেরকে কোনঠাসা করেই ইতি টানছে।
মহান স্বাধীনতা দিবসে সংগঠনের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার সাংবাদিকদের জন্য ১৯৭২ সালে জাতীয় প্রেস কাউন্সিল নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করেছিল। কিন্তু নামকাওয়াস্তে প্রতিষ্ঠিত প্রেস কাউন্সিল আসলে সাংবাদিকদের নিয়ে আদৌ ভাবেনি। পক্ষান্তরে সরকার আইনজীবিদের জন্য বার কাউন্সিল গঠন করলে সেটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কার্যকর রয়েছে। একটি স্বার্থান্বেষি গোষ্ঠির ঈন্ধনে সাংবাদিকদের কোনঠাসা করে দূর্বল রাখার জন্য প্রেস কাউন্সিলটিকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম রেজাউল করিম, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, আব্দুল মান্নান তাওহীদ, এইচএম দেলোয়ার হোসেন, সোহেল রানা প্রমূখ।
উল্লেখ্য, বিএমএসএফ ইতিপূর্বে প্রেস কাউন্সিলকে কার্যকর করার দাবীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রীর নিকট সারাদেশ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু দেশ স্বাধীনতার ৪৭ বছর পেরিয়ে গেলেও অদ্যবদি প্রণীত হয়নি সাংবাদিকদের একটি জাতীয় তালিকা। প্রণীত হয়নি সাংবাদিক নিয়োগ নীতিমালা। দাবী করা হচ্ছে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে একটি যুগোপযোগি আইন প্রণয়নের।
সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর সারাদেশের পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন, সাংবাদিক নিয়োগ নীতিমালা, সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে যুগোপযোগি আইন প্রণয়ন, ৫৭ পরবর্তী ৩২ ধারা সংশোধন, তদন্তে দোষী প্রমানিত হওয়ার আগে পুলিশ কোন সাংবাদিককে গ্রেফতার করতে পারবেনা, পাঠ্যবইয়ে গণমাধ্যম বিষয়ক একটি অধ্যায় অর্ন্তভুক্তিকরণ, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে পিআরও পদে সাংবাদিকদের নিয়োগ বাধ্যতামূলক, প্রতিটি গণমাধ্যমে সাংবাদিকদের অনুকুলে কল্যান ফান্ড গঠন, সরকার কর্তৃক আগেরমত প্রতিটি পত্রিকায় প্রয়োজনীয় কাগজ বরাদ্দসহ ১৪ দফা দাবী বাস্তবায়নের জন্য বিএমএসএফ কাজ করছে। এছাড়া তথ্য অধিদপ্তরকে সাংবাদিকদের স্বতন্ত্র অধিদপ্তর হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভেরও দাবি করে আসছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। বলা হয়, কৃষকদের কৃষি অধিদপ্তর, জেলেদের মৎস্য অধিদপ্তর, শিক্ষকদের শিক্ষা অধিদপ্তর, পুলিশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, ডাক্তারদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করছে। কিন্তু দূর্ভাগ্য সাংবাদিকদের জন্য তথ্য অধিদপ্তর থাকলেও আসলে সাংবাদিকদের সাথে কোনরুপ যোগসূত্র নেই।
সংগঠনটি দেশে পেশাদার সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রেস কাউন্সিলকে কার্যকর করে গড়ে তোলারও দাবী করা হচ্ছে। দাবীগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সকল জেলা/উপজেলার সাংবাদিকদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানানো হয়।