ধার দেওয়া ৭ লাখ টাকা পেতে মামলা: প্রতারণায় সর্বস্বান্ত জুটমিল শ্রমিক

প্রকাশঃ ২০২৩-০৩-১৩ - ১২:৫১

খুলনা : সন্তানের গচ্ছিত ৭ লাখ টাকা ধার (ঋণ) দিয়ে উপকার করে আওয়ামী লীগ নেতার প্রতারণার শিকার হয়ে পথে বসেছেন বেকার পাটকল শ্রমিক মোস্তফা ফকির। এই অসহায় বাবা ওই টাকার উদ্ধারের জন্য বার আকুতি জানিয়ে কোন ফল পাননি। পরে আইনি নোটিশ দিয়ে টাকা পেতে আদালতে মামলা করেছেন। আলোচিত ওই ব্যক্তি একসময়ের জাতীয় পার্টি পরে বিএনপি ও বর্তমানে নগরীর ৩৬নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কিসমত আলী। তিনি নগরীর খানজাহান আলী থানার আটরা এলাকার মৃত সৈয়দ আফছার আলীর ছেলে। চতুর এ ব্যক্তি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মোস্তফা ফকিরের টাকা হাতিয়ে চার বছর আগের বন্ধ হওয়া ব্যাংকের চেক প্রদান করেন। একই সাথে স্ট্যাম্পে চুক্তিনামা করে স্বাক্ষর করেছেন।

ভুক্তভোগী ও আদালতে দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দ কিসমত আলী পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে মোস্তফা ফকিরের কাছ থেকে তাঁর প্রবাসী ছেলের পাঠানো ৭ লাখ টাকা গ্রহণ করে। কিসমত আলী মোস্তফা ফকিরকে ব্যবসায়ী পার্টনার করারও প্রতিশ্রুতি দেন। একই সাথে ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট ট্রাস্ট ব্যাংকের জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট শাখার মেসার্স কিসমত আলী সন্স’র হিসাব নম্বর ০০৬৬-০২১০০০৪২৪৫ এর বিপরীতে ৭ লাখ টাকার চেক প্রদান করেন। একই সাথে একটি স্ট্যাম্প ডিড স্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী কিসমতের কাছে টাকা চাইতে গেলে ভয়ভীতি প্রদর্শন, দলের নাম ব্যবহার করে হুমকি দিতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে মোস্তফা ফকির চেকটি গত ১ ডিসেম্বর নিজের ব্যাংক একাউন্টে ও ৪ ডিসেম্বর সৈয়দ কিসমতের একাউন্টে জমা দিলে তা ফেরত আসে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, সৈয়দ কিসমত মোস্তফা ফকিরকে চার বছর আগে বন্ধ করা একাউন্টের চেক দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর চাকুরিহারা জুটমিল শ্রমিক মোস্তফা ফকির স্বর্বস্ব হারিয়ে পথে বসতে চলেছেন। তিনি সৈয়দ কিসমতকে টাকা পেতে লিগ্যাল নোটিশ, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদানের পর মূখ্য মহানগর হাকিম এর আদালতে চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি মামলা (নং জিআর-৬/২৩) করেন।

মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী এড. কামরুল ইসলাম জোয়াদ্দার বলেন, মোস্তফা ফকির প্রতারণার শিকার হয়েছে। তিনি সর্বস্ব হারিয়ে ন্যায় বিচার চেয়েছেন। আসামী ১৮৮১ সনের এন,আই,এ্যাক্টের ১৩৮ ধারা মতে শাস্তি পাওয়ার অপরাধ করেছেন। আশাকরি সত্যের জয় হবে।

মোস্তফা ফকিরের প্রতিবেশীরা জানান, সৈয়দ কিসমতের প্রতারণায় অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছেন। মোস্তফা ফকির আলিম জুটমিলের শ্রমিক ছিলেন। এখন ছোট একটি পানের দোকান চালান। প্রবাসী ছেলের টাকা হারিয়ে বিপদে পড়েছেন।