নির্মম নির্যাতনের শিকার বৃদ্ধ পিতা: জালজালিয়াতির মাধ্যমে চাকুরী গ্রহনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশঃ ২০২৩-০৬-০৩ - ১৪:০৩

খুলনা :  বৃদ্ধ পিতকে শারীরিক ভাবে নির্মম নির্যাতন করেছে নিজ কন্য। অবৈধভাবে চাকুরী গ্রহনের প্রতিবাদ করায় এ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বৃদ্ধ পিতা। এরপর জমি আত্মসাৎ করে নেয় অভিযুক্ত কন্যা। খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত কন্যা সনদ জালিয়াতি করে মহল্লাদার পদে চাকুরী করছেন। দীর্ঘদিন নির্যাতনের শিকার হয়ে শনিবার খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কন্যার দ্বারা নির্মম নির্যাতিনের শিকার এই হতভাগ্য পিতা। পিতার পক্ষে তার ছেলে নিতাই বিশ্বাস লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।  নির্যাতিত পিতার নাম মধুসুধন বিশ্বাস (৯৫), পিতা- মৃত পুটিরাম বিশ্বাস। গ্রাম-হোগলাডাঙ্গা, ডাকঘর-ছয়ঘরিয়া, ইউনিয়ন- ১নং জলমা, উপজেলা-বটিয়াঘাটা, জেলা-খুলনা। তিনি তার কন্যার বিরুদ্ধে জমিজমা জোড়পূর্বক লিখে নিয়ে ভিটেবাড়ি ছাড়া করা, সরলতার সুযোগ নিয়ে জমি রেজিষ্ট্রি করে এবং ভুয়া সনদে চাকুরী নেওয়ার অভিযোগ করেছেন।

মধুসুধন বিশ্বাস বলেন, আমার বয়স হয়েছে। আমার একটি ছেলে সন্তান এবং চারটি মেয়ে রয়েছে। আমার মেয়ে টুকু রানী টিকাদারের কাছে থাকাকলীন সময়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমার জমি জায়গা লিখে নেয়। আমি এ বিষয় জানতে পারলে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে। বর্তমানে আমি আমার  একমাত্র ছেলের সাথে বসবাস করছি। টুকু রানী টিকাদার তার ছেলে সৌরভকে দিয়ে বাশ দিয়ে আমাকে মারপিট করায়। এক পর্যায়ে আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে এলাকার লোকজন আমাকে বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তিনি দু:খ প্রকাশ করে বলেন, আমি আমার মেয়ের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এছাড়া আমার মেয়ে টুকু রানী টিকাদার ৭ম শ্রেনী পর্যন্ত লেকা পড়া করলেও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে এস এস সি পাসের সদন দিয়ে দফাদারের চাকুরি গ্রহন করে। টুকু রানী টিকাদারের ভুয়া সনদে চাকুরী করনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সূত্রে, ২০১৭ সালের ২৭শে জুলাই বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বাক্ষরিত দফাদার ও মহল্লাদার পদে লোক নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এ পদে টুকু রানী টিকাদার নিয়োগ লাভের জন্য আবেদন করেন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ হিসেবে এস.এস.সি পাশের সনদ দাখিল করেন। পরবর্তীতে প্রচুর টাকা ঘুষ দিয়ে এ চাকুরী পান। তথ্য প্রমানসূত্রে,  কিন্তু তিনি ১৯৯১ সালে প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠ (রাজবাধ) বিদ্যালয় হতে সপ্তম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত হন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় প্রার্থীর বয়স ২৮/০২/২০১৭ তারিখে ১৮-৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে। কিন্তু তার জন্ম তারিখ ২১-০৩-১৯৭৫ অর্থাৎ ২৮-০২-২০১৭ তারিখে তার বয়স ৪১ বছর ১১ মাস ৭ দিন। তার বিদ্যালয়ের জন্ম তারিখ অনুযায়ী ২৮-০২-২০১৭ খ্রি. তারিখে বয়স ৩৯ বছর ৮ মাস ১১ দিন। আসামীর বয়স জাতীয় পরিচয় পত্র ও বিদ্যালয়ের প্রত্যয়ন পত্রে উল্লিখিত জন্ম তারিখে বয়সের গড়মিল রয়েছে। এছাড়া দফাদার পদে চাকুরির ক্ষেত্রে মহল্লাদার পদে ০৭ (সাত) বছরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ থাকলেও প্রার্থীর কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। এখানে যারা নিয়োগ দিয়েছেন তারাও জড়িত। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আদালত সহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ উত্থাপিত হলে সাময়িক ভাবে সে বরখাস্ত হয়। কিন্তু চূড়ান্ত বিচার এখনও হয়নি। সে উৎকোচ এর মাধ্যমে পুনরায় চাকরী ফিরে পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। তার মত অসৎ ও লোভি মহিলার শাস্তি হওয়া দরকার। আমার মেয়ে হওয়া স্বত্তেও তার মত এমন অসৎ মহিলার শাস্তি দাবি করছি।