পলাশবাড়ীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিরব অবনতি

প্রকাশঃ ২০২০-০৫-১০ - ১৭:৪৪

আশরাফুল ইসলাম, গাইবান্ধা : গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানায় বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত আসামীসহ আদালত কর্তৃক গ্রেফতার পরোয়ানা ভুক্ত প্রায়দের হাজার আসামী বিভিন্ন ভাবে ঘোড়াফেরা করলে ও পুলিশ তাদের ধরছেনা। ফলে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় পলাশবাড়ী থানার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিরবে অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। বিগত সময়ে নাশকতা সহিংসতা ও জ্বালাও পোড়াও মামলা গুলোর পাশাপাশি গ্রেফতার পরোয়ানা ভুক্ত আসামির মধ্যে রয়েছে ডাকাতি, চুড়ি, ছিনতাই, জমিজমা সংক্রান্ত, মাদক, যৌতুক নারী শিশু নির্যাতন, সন্ত্রাস নাশকতা ও অগ্নিসংযোগ সম্বলিত মামলা। এসব আসামীদের গ্রেফতার না করায় ফলে এরা প্রকাশ্য দিবালোকে চলাফেরা অব্যাহত রেখে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে বলে সচেতন মহল মনে করেন। এসব অপরাধীরা কতিপয় পুলিশের অসাধু কর্মকর্তার সাথে আতাত করে এসব অপরাধ কর্মকান্ড দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছে। এড়া কখনো কখনো পুলিশকে ব্যাবহার করে  সাধারণ মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করে আসছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ সদস্য জানায় বিভিন্ন মামলায় প্রায় হাজার ১২ শ আসামী পলাতক রয়েছে।জীবিকা নির্বাহের তাগিদে অনেকে আবার রাজধানী ঢাকা নারায়ণগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আছে।

গত এক বছরে এই থানায় পারিবারিক কলহ ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে খুন হয়েছে প্রায় হাফ ডজনের ও বেশি মানুষ। করোনা পরিস্থিতিতে জেলায় লক ডাউন কালেই খুন হয় দুজন এদের মধ্যে একজন নারী স্বামীর সংসারে অন্যজন পুরুষ জমিজমা সংক্রান্ত জেরের দ্বন্দে কুপিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এছাড়াও গত কয়েকদিনে পৌরশহরের আশপাশ এলাকায় ছিচকে চুড়ি, মাদক ব্যবসা, ও অধিপত্য বিস্তারের ঘটনা নিত্তনৈমিত্তিক ব্যাপার তো রয়েছেই। উপজেলার ঘোড়াঘাট রোডে লকডাউনের কঠোরতায় মাদককারবারিদের নিরাপদ রুট হিসাবে কিশোরগাড়ী সড়কটিতে সরব চলাচল চলমান রয়েছে ।

বর্তমান পরিস্থিতিতেও পলাশবাড়ী থানা এলাকায় প্রতিনিয়তই ঝরছে রক্তের খেলা। অভিযোগ দিয়ে বিচার পাচ্ছেনা হামলার স্বীকার ব্যক্তিরা তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। পৌর এলাকায় সহ কিশোরগাড়ী, বরিশাল, ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ঘটনা গোটা থানার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। অধিকাংশ ঘটনার মামলা দায়ের করতে এসে মানুষ বিভিন্ন ভাবে পুলিশী হয়রানির স্বীকার হচ্ছে। দিনের পর দিন তারা থানার বারান্দায় ও পুলিশ কর্মকর্তাদের দারস্ত হয়ে মামলা দায়ের করতে না পেরে ব্যাপক হতাশায় ভুগছেন। এছাড়াও ছোট খাট পারিবারিবারিক সমস্যা গুলো নিয়ে আইনের আশ্রয় নিলেও সঠিক বিচার বা আইনী সহায়তা পাচ্ছে না সাধারণ মানুষসহ অন্যান্যরা।

অনেকে অভিযোগ করে বলেন গরীবের বিচার আইন এই থানায় নেই।তবে দালালের মাধ্যমে আসলেই কেবল সব অসম্ভব সম্ভবে পরিনত হয় । তাও নাকি নিমিষে সেটা আবার থানার বিশ্বস্ত দালাল মাধ্যমে হতে হবে। বিগত সময়ে দালাল মুক্ত থানা থাকলে বর্তমান সময়ে বিশেষ এক দালালের দালালিতে হয় থানায় মামলা মোকাদ্দোমা। পৌর এলাকায় উপজেলা পরিষদের পাশে জামালপুর গ্রামের অসহায় পরিবার সাদেকুল ইসলাম চেংটু ও আকাশি দম্পতির একমাত্র পুত্র সজীবের গলায় গত শবেবরাতে চাকু মারে স্থানীয় দুই বখাটে যুবক এঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলেও আজোও কোন প্রকার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। ভুক্তভোগী এ পরিবারটি অবশেষে জেলা পুলিশ সুপারের নিকট যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে।

বিগত সময়ে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া বিপিএম এর সময় গোটা গাইবান্ধা জেলা জুয়া মুক্ত হয়েছিলো। বর্তমান পুলিশ সুপার এ ধারাবাহিকতা রক্ষায় নির্দেশ দেওয়ায় পুলিশী কার্যক্রম জেলা জুড়ে চলছে তবু জুয়ারুরা বিভিন্ন ভাবে কতিপয় কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে গোপনে বড় বড় জুয়া খেলা হয় স্থান পরিবর্তন করে। সময়ের সাথে সাথে আবারো পলাশবাড়ী থানার বিভিন্ন স্থানে চলছে জুয়া। পৌর শহরের প্রায় ১০ টি স্পটে এখন ও চলছে দিব্যি জুয়া। অভিযোগ রয়েছে কতিপয় পুলিশ সদস্য এই জুয়া থেকে নিয়মিত টাকা আদায় করে। যদি ও গত ৫ মে রাতে পুলিশ জুয়া খেলার অপরাধে ৯ জনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করে। এর পরেদিন আরো ৭ জন কে আটক করা হয়। তবে  ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছে এসব জুয়ারু চক্রের রাখব বোয়ালরা।

এদিকে গত ৫ মে টিসিবি ভোগ্যপন্য অনিয়মের ব্যাপারে সাংবাদিকরা ইউএনও, ওসিকে অবগত করলে ঘটনার দের ঘন্টা পর তারা ৫ জন এস আই ও ডিএসবির ও কয়েকজন সদস্যকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়।  কিন্তু দুঃখ জনক হলে ও সত্য এসব কর্মকর্তার সামনে দুই সাংবাদিককে মারপিট করা হলে পুলিশ ম্যাজিষ্ট্রেট তাদের উদ্ধার না করে নীবর ভুমিকা পালন করে। এ ঘটনায় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে থানায় এজাহার দাখিল  হলে ও পুলিশ মামলা গ্রহন না করে উল্টো এর আগেই তিনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ গ্রহণ করেন।

সার্বিক বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদার রহমান মাসুদ ব্যস্ত আছে বলে সাংবাদিকের ফোন কেটে দেন।

তবে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সি সার্কেল আসাদুজ্জান আসাদ সাংবাদিকদের  বলেন, যে বিষয় গুলো ওঠে এসেছে তা ক্ষতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।