পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: পাইকগাছায় বিক্রি করা নবজাতককে ফিরিয়ে নেওয়ায় প্রতিবেশীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ঘেরা দিয়ে নবজাতক পরিবারের যাতায়াতের সকল পথ বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে নবজাতক পরিবার। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
জানাগেছে, পাইকগাছা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা দীলিপ-সুভাষী দম্পত্তি অভাব অনটন ও একাধিক কন্যা সন্তানের কারণে গত ১২ ডিসেম্বর ভুমিষ্ট হওয়া তাদের নবজাতক কন্যা সন্তানকে ক্লিনিকের টাকা পরিশোধ করতে ৯নং ওয়ার্ডের বাতিখালী গ্রামের নিঃসন্তান লক্ষণ দম্পত্তির নিকট ৪ হাজার ২শ টাকায় বিক্রি করে দেয়। পরবর্তীতে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে থানার অফিসার ইন-চার্জ আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের সহায়তায় দীলিপ দম্পত্তি গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের বিক্রি করা নবজাতককে ফিরে পায়। এদিকে নবজাতককে নিয়ে বাড়ী ফেরার পর বিপাকে পড়েন দীলিপ দম্পত্তি। বিক্রি করা নবজাতককে ফিরিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতিবেশীরা তাদের যাতায়াতের সকল পথ ঘেরা দিয়ে বন্ধ করে দেয়। এর ফলে গত ৩ দিন অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে নবজাতকের পরিবার। শনিবার সকালে সরেজমিন গেলে তাদের যাতায়াতের সব পথে ঘেরা দেওয়া দেখা যায়। মূলত দীলিপ একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি। সে এবং তার পরিবার গত ৭-৮ বছর যাবৎ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন একটি স্থানে বসতবাড়ী নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে। দলিল মূলে তাদের যাতায়াতের পথের ব্যবস্থা থাকলেও শুরু থেকেই উল্লেখিত পথটি প্রতিবেশী বাতিখালী গ্রামের নিমাই এর কারণে আটকে রয়েছে। এরপর তারা বিকল্প দুটি পথ দিয়ে কোন রকমে যাতায়াত করে আসছিল। সন্তান ফিরিয়ে নেওয়ার পর সে পথ গুলোও বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিবেশীরা। সুভাষী’র মা দৈমন্তী জানান, সন্তানকে নিয়ে আসার পর প্রতিবেশীদের কাছে আমরা কোনঠাসা হয়ে পড়েছি। প্রয়াত মেয়র এসএম মাহাবুবর রহমানের জমির যে আইলের উপর দিয়ে আমরা যাতায়াত করতাম সেটি প্রতিবেশী ওয়াজেদ আলী কাঁটা দিয়ে ঘেরা দিয়ে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছেন। আরেকটি বাড়ীর পিছনের সরু গলি দিয়ে যাতায়াত করা যেত সেখানেও ডাল-পালা ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে আমাদের যাতায়াতের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত ৩দিন আমরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলর এসএম তৈয়েবুর রহমানকে অবহিত করা হয়েছে বলে নবজাতকের মা সুভাষী সরকার জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে কাউন্সিলর এসএম তৈয়েবুর রহমান জানান, ওরা আমার কাছে কিছু সমস্যার কথা বলে ছিল। তবে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে এ বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে ঘটনা যদি সঠিক হয়ে থাকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্থানীয় এ জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে সরেজমিন গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে থানার অফিসার ইন-চার্জ আমিনুল ইসলাম বিপ্লব জানিয়েছেন।