পালাতক ডিলারের নামে সার উত্তোলনের ঘটনায় তদন্ত টিম গঠন

প্রকাশঃ ২০২৩-০২-১১ - ১৫:১৯

মনিরামপুর : যশোরের মনিরামপুর পৌরশহরের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী রতন কুমার পাল পরিবারসহ গতবছর ভারতে পাড়ি জমিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশে তার নামে থাকা বিসিআইসির লাইসেন্সর বিপরীতে প্রতিমাসে বরাদ্দকৃত সারসহ কৃষিপণ্য উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে কৃষি বিভাগের উপসহকারি কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার দাস ও রতন পালের প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান জোগসাজসে প্রতিমাসে রতনপালের নামে বরাদ্দকৃত লাখ লাখ টাকার সারসহ কৃষিপন্য উত্তোলন করছেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ফলে বিষয়টি তদন্তের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা কৃষি অফিসারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানাযায়, পৌরশহরের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী রতন কুমার পাল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে পরিবার পরিজন নিয়ে গতবছর ৮ নভেম্বর ভারতে পাড়ি জমিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন। তার নামে ছিল বিসিআইসির ডিলারশিপের লাইসেন্স (মেসার্স রতন কুমার পাল)। সরকারের নিয়ম রয়েছে কোন লাইসেন্সধারী স্থায়ীভাবে দেশ ত্যাগ করলে তার নামের লাইসেন্স বাতিল বলে গণ্য হবে। এছাড়া সার ডিলার নিয়োগ ও বিতরণ সম্বলিত নীতিমালা/২০০৯ এর ধারা ৮ মোতাবেক ওই লাইন্সেসের বিপরীতে মালামাল উত্তোলন করা আইন বহির্ভূত। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে গতবছর নভেম্বর মাসে মেসার্স রতন পালের সত্তাধিকারী রতন পাল পরিবার পরিজন নিয়ে ভারতে পাড়ি জমালেও ডিসেম্বর মাস থেকে তার নামে উপসহকারি কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার দাস ও হাবিবুর রহমান জোগসাজসে নিয়মিতভাবে বরাদ্দকৃত সারসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য উত্তোলনের পর বিক্রি করে আসছেন ।

জানাযায়, মনিরামপুর পৌরশহরের জুড়ানপুর এলাকায় উপসহকারি কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার দাসের শ্বশুর বাড়ি হওয়ার সুবাদে এলাকায় রয়েছে তার বেশ প্রভাব। ফলে হাবিবের সাথে জোগসাজসে সঞ্জয় এধরনের অপকর্মে সহযোগীতা করে আসছিলেন। অভিযোগ রয়েছে জানুয়ারি মাসেও ৯৫ মে:টন সার উত্তোলন করা হয়েছে। এমনকি চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেও বরাদ্দ করা হয়েছে ৩১ মে:টন সার। এ বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য ডিলারদের মধ্যে কানাঘুষি শুরু হলে নিজেকে রক্ষা করতে উপসহকারি কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার দাস তড়িঘড়ি করে উচ্চ পর্যায়ে তদ্বির করিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি বাঘারপাড়া উপজেলায় বদলি হন। তবে রতন পালের নামে বরাদ্দকৃত সার উত্তোলনের ঘটনায় জড়িত থাকার দায় অস্বীকার করে উপসহকারি কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার দাস জানান, মেসার্স রতন পালের প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান রতন কুমার পালের স্বাক্ষরিত কাগজপত্র জমা দিয়ে মালামাল উত্তোলন করে থকেন। অন্যদিকে হাবিবুর রহমান জানান, তিনি বৈধভাবে রতন পালের প্রতিনিধি হিসেবে প্রায় সাতবছর ধরে সার উত্তোলন করে আসছেন। তিনি এব্যাপারে কোনপ্রকার অনিয়ম করেননি বলে দাবি করেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে এলাকার আবুল কাশেম নামে একব্যক্তি জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।উপজেলা কৃষি অফিসার শাহীন ইসলাম জানান, তিনি মনিরামপুরে সদ্য যোগদান (আড়াইমাস) করায় বিষয়টি জানতে পারেননি। লিখিত অভিযোগ পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় উপজেলা কৃষি অফিসার শাহীন ইসলামকে প্রধান করে ছয় সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। শাহীন ইসলাম জানান, দুুএকের মধ্যে তদন্ত করে পরবির্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।