মোংলা (বাগেরহাট) : শত বছরের ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে তিনদিন ব্যাপী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসব পূর্ণস্নানের মধ্যে দিয়ে শনিবার সকালে শেষ হয়েছে। হাজার হাজার পূর্ণ্যার্থী শনিবার সকালে সূর্যোদয়ের আগে সাগরের প্রথম জোয়ারে পূর্নস্নান করে তাদের মনো বাসনা যেন পূর্ণ হয় তার প্রার্থনা করেন। গত ২ নভেম্বর এই রাস উৎসব শুরু হয়। প্রতি বছর কার্ত্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের দুবলার চরের আলোরকোলে এই রাস উৎসব শুরু হয়। রাস উৎসবের পূর্ণস্নানের সমাপনী অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে অনান্যদের মধ্যে ছিলেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস, পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়, বন সংরক্ষক (সিএফ) আমির হোসাইন চৌধুরী, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সুন্দরবনের রাস উৎসবে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী, পুরুষ ও দর্শনার্থীসহ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষ এই উৎসবে সমাবেত হন। তিনদিনের এই উৎসব স্থলে দোকানিরা নানা পসরা সাজিয়ে বসেন। শনিবার সকালে সূর্যোদয়ের আগে সাগরের প্রথম জোয়ারে পূর্নস্নানকরে তাদের মনো বাসনা যেন পূর্ণ হয় তার প্রার্থনা করেন। কার্ত্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূর্ণলাবের আশায় এখানে জড়ো হয়েছিলেন। সূর্যোদয়ের আগে সাগরের জোয়ারের জলে পূর্নস্নানকরলে পাপমোচন হয়ে থাকে বলে তারা বিশ্বাস করেন। এখানে প্রতিদিন পূজা অর্চনা, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। রাস উৎসব উৎযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ দে বলেন, ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে তিনদিন ব্যাপী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসব পূর্ণস্নানেরমধ্যে দিয়ে শনিবার সকালে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। সরকারের মন্ত্রী, প্রশাসনের কর্মকর্তারাসহ হাজার হাজার পূর্ণার্থী ও পর্যটকরা এই রাস উৎসবে অংশ নেন। রাস উৎসব স্থল সব ধর্মের মানুষের এক মহা মিলন মেলায় পরিণত হয়। সুন্দরবন বিভাগের বনসংরক্ষক (সিএফ) আমির হোসাইন চৌধুরী বলেন, সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে তিন দিনব্যাপী রাস উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। রাস উৎসবকে ঘিরে সুন্দরবনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পূর্ণার্থীদের যাতে উৎসবে যোগ দিতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য র্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও বনবিভাগ ছিল তৎপর। এদিকে রাতভর পূজা-অর্চনা আর সকালে সমুদ্রের নোনা জলে পূর্ণস্নানের মধ্যে দিয়ে শেষে হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের তিনদিন ব্যাপী রাস উৎসব। ঐতিহ্যবাহি রাস পূর্ণিমা বা রাস উৎসবকে ঘিরে মোংলার কানাইনগর সার্বজনীন গোবিন্দর মন্দিরে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী, পুরুষ ও দর্শনার্থীসহ জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটে। দল বেঁধে নারী-পূরুষসহ সবাই মিলে পূন্য লাভের আশায় সমুদ্র থেকে আসা নোনা পানিতে স্নানে মিলিত হয়। এ উপলক্ষে মেলা সহ মন্দির চত্বরে নানা আনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নানা পন্যের স্টল বসে মেলা চত্বরে।