ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পুরণে ঠাকুরগাঁওয়ে পোল্ট্রি শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে তৃণভোজী বন্য পাখি টার্কি । ঠাকুরগাঁওয়ের কিছু বেকার যুবক মিলে গড়ে তুলেছে এ খামার। দুরদুরান্ত থেকে অনেক বেকার যুবকরা আসছেনতাদের এ টার্কি খামার দেখতে।
খামারীরা বলছেন, সহজশর্তে ব্যাংক ঋন দিলে টার্কি খামার করে লাভবান হবে অনেকে বেকার যুবক । টার্কি খামার গড়ে তুলতে বেকারদের উৃদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি কারিগরি সহযোগীতারও আশ্বাস দিয়ে আসছে প্রাণীসম্পদ বিভাগও ।
পোল্ট্রি খাতে ক্রমাগত লোকসানের মুখে যখন ঠাকুরগাঁওয়ের শতাধিক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। ঠিক সেই সময়েই কয়েকজন যুবক পোল্ট্রি শিল্পে নতুন মাত্রায় যোগ করেছে টার্কি নামে এক বড় আকারের গৃহপালিত এই পাখি।
টার্কির উৎপত্তি স্থল উত্তর আমেরিকায় হলেও ইউরোপসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশে এ পাখি পালন করা হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের খাদ্যতালিকায় অন্যতম পুষ্টিকর উপাদান এ পাখির মাংস। ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে ওঠার ছয় মাসের মধ্যে টার্কি ডিম দেয়। ছয় মাসের টার্কির ওজন হয় পাঁচ থেকে ছয় কেজি। আর পুরুষ টার্কি হয় প্রায় আট-নয় কেজি। আমেরিকায় অভিজাত শ্রেনীর খাদ্য তালিকায় বিশেষ স্থান করে নিয়েছে টার্কির মাংস। আমাদের দেশে মুরগির মাংসের মতো করেই টার্কি রান্না করার পাশাপাশি রোস্ট ও কাবাবও তৈরি করা হচ্ছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের তরুন উদ্যোক্তা স্ব-রাজ, মিন্টু, ফারুকসহ কয়েকজন খামারি ৯’মাস ধরে বাণিজ্যিকভাবে টার্কি উৎপাদন করছে। তারা সদর উপজেলা সালন্দর তেলিপাড়া ও শহরের ঘোষপাড়ায় এই টার্কির খামার গড়ে তুলেছে। ভারত থেকে আনা এ দুটি খামারে ছোটবড় ৫শ টার্কি রয়েছে।
উদ্যোক্তা নাদিম ও স্বরাজ এই দুই বন্ধু বলছেন বাংলাদেশে কয়েকটি বাণিজ্যিকভাবে টার্কি খামার গড়ে উঠছে। আর এ জেলার এটি প্রথম বাণিজ্যিক খামার। এ খামার দেখতে জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে শুরু করে জেলার বাহিরের লোকেরাও আসছেন। টার্কি খামার করতে উদ্বুদ্ধও হচ্ছেন কেউ কেউ। দেশে এজাতের পাখি ও মাংসের চাহিদা থাকায় আগামীতে আরো বড় পরিসরে যাবার চিন্তা রয়েছে তাদের।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণী সম্পদের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ডা: আব্দুর রহিম বলছে, পাখিজাতীয় মাংস উৎসের মধ্যে মুরগি, হাঁস, তিতির, কোয়েলের পর টার্কি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। টার্কির মাংস অন্যান্য পাখির মাংস থেকে কম চর্বিযুক্ত, তাই অন্যান্য পাখির চেয়ে টার্কির মাংস অধিক পুষ্টিকর। আশা করছি এ খামারের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। বেকারদের উৃদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি কারিগরি সহযোগীতারও আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা ।
টার্কি খামার করে বেকার যুবকরা ঘুচাবে তাদের বেকারত্ব। এজন্য সহজ শর্তে ব্যাংক ঋনের পাশাপাশি কারিগরি সহায়তা দেবে সংশ্লিষ্টরা এমন প্রত্যাশা সবার।