প্রকৃত হত্যাকারীদের আটক ও নিরীহ ব্যক্তিদের হয়রানির প্রতিবাদে স্মারকলিপি প্রদান

প্রকাশঃ ২০১৮-০১-২৯ - ১৯:৪৩

যশোর অফিস : যশোর সদর উপেজেলার ভেকুটিয়া লালন আখড়াবাড়ীর প্রতিষ্ঠাতা ও সাধক আকবর আলী সাঁইজির হত্যাকান্ডের সাথে প্রকৃত জড়িতদের আটক এবং নিরীহ ব্যক্তিদের হয়রানি না করার দাবিতে যশোরের সম্মিলিত সাংষ্কৃতিক জোট স্মারক লিপি প্রদান করেছে। সোমবার সকাল ১১টার দিকে  এ স্মারক লিপি প্রদান করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংষ্কৃতিক জোট যশোরের সভাপতি ডি এম শাহিদুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু, সাবেক সভাপতি সুকুমার দাস, হারুন-অর-রশিদ, সাবেক সম্পাদক দিপংকর দাস রতন, সাজ্জাদ গণি খান রিমন, শাহজাহান আলমগীর, প্রদীপ চক্রবর্ত্তী রানা, জাহাঙ্গীর আলম,মীর লিয়াকত আলীসহ জোটের সদস্যবৃন্দ।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, পরিতোষ বাউল একজন বাউল শিল্পী। শৈশবকাল থেকে তিনি মহামতি লালন সাঁইজির একজন অনুসারী । ভেকুটিয়া গ্রামের আকবর আলী সাঁইজির কাছ থেকে তিনি বাউলিয়ানায় দীক্ষা লাভ করে তার সাথেই শিষ্য হিসাবে থাকতেন। আকবর সাঁইজি ভেকুটিয়া গ্রামের নিজবাড়িতে ছোট পরিসরে যে আখড়া নির্মাণ করেন সেখানে পরিতোষ বাউল খাদেম হিসাবে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতেন। আকবর সাঁইজির স্বপ্ন ছিল তিনি নিজের ঐ জমিতে পরিপূর্ণ একটি লালন চর্চ্চা ও গবেষণা  কেন্দ্র গড়ে তুলবেন। জমি দানকে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহের জেরে গতবছর ১৬ জুলাই ভেকুটিয়া মুক্তেশ্বরী নদীতে আকবর সাঁইজির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। প্রথমে সবাই আত্মহত্যা মনে করলেও ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যাকান্ড বলে উল্লেখ করা হয়। সেই সূত্রধরে প্রকৃত হত্যাকারীদের আড়াল করতে নিরীহ বাউল শিল্পী পরিতোষকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেছে সাঁইজির প্রথম পক্ষের স্ত্রী যার নাম্বার ১০৬/১০৬। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী রিজিয়া বেগমকে হত্যার এক নাম্বার আসামী এবং পরিতোষ বাউলকে দুই নাম্বার আসামী করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাদেরকে আটক করা হয়। বিচারের নামে নিরীহ মানুষের প্রতি নির্যাতনের  এ ঘটনায় সম্মিলিত সাংষ্কৃতিক জোট ও যশোরের সুশীল সমাজ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এ সময় পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সেই সাথে কোন নিরীহ নিরপরাধ যেন হয়রানী শিকার না হয় তিনি সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তিনি তাৎক্ষণিক ভাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দিন শিকদারকে বিষয়টি তদন্তের জন্য দায়িত্ব অর্পণ করেন।

যশোর সম্মিলিত সাংষ্কৃতিক জোটের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসাবে আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে চারটায় চিত্রা মোড়ে সকল সামাজিক, সাংষ্কৃতিক, পেশাজীবি ও সুশীল সমাজের অংশগ্রহণে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।