প্রশাসনের কঠোরতায় দাকোপে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহন : নৌকা ৭ আনারস ২

প্রকাশঃ ২০২১-০৯-২১ - ১৭:২৭

আজগর হোসেন ছাব্বির : ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে দিনভর ছিল নানা উদ্বেগ উৎকন্ঠা। তবে সব কিছু ছাপিয়ে দাকোপে শান্তিপূর্ন পরিবেশে অবাধ সুষ্ট নিরপেক্ষ ভোট গ্রহনে সৃষ্টি হল নতুন উদহারন। উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট ও দাকোপ থানা পুলিশ সম্মিলিতভাবে একটি স্বচ্ছ ভোট উপহার দিয়ে কেবল নিজেদের উপর নয়, বরং সরকারের উপর জনতার আস্থা সৃষ্টিতে রেখেছেন বিশেষ ভূমিকা।
বৈরী আবহাওয়ার মাঝে সোমবার সকাল ৮টা থেকে খুলনার উপকুলিয় উপজেলা দাকোপের ৯টি ইউনিয়নে একযোগে শুরু হয় ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহন। বিরতিহীন ভাবে সেটি চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সকাল থেকে প্রতিটি কেন্দ্রে দেখা যায় ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। সব থেকে বেশী ছিল নারী ভোটারদের উপস্থিতি। উপজেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে এবার দাকোপে ৭৭% ভোট পড়েছে। এবারের নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন কিছু উত্তেজনা ছাড়া শতভাগ শান্তিপূর্ন পরিবেশে নিরপেক্ষ ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ১০ টার দিকে ২ নং পানখালী কেন্দ্রে বহিরাগতদের আগমনকে কেন্দ্র করে সেখানকার আনারসের সমর্থকদের মাঝে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে তড়িৎ গতিতে প্রশাসন বহিরাগতদের বিতাড়িত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ছাড়া একই ইউনিয়নের মৌখালী কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থী শেখ আব্দুল কাদের কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাব্বির আহম্মেদের সমর্থকরা উত্তেজিত হয়। এ খবরে লক্ষিখোলা এলাকায় নৌকার সমর্থকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। সেখানে ৩ জন সাব্বির সমর্থক অবরুদ্ধ আছে এমন সংবাদে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট মিন্টু বিশ্বাস সেখানে উপস্থিত হয়ে নৌকার প্রার্থী শেখ আব্দুল কাদেরের সহায়তায় তাদেরকে উদ্ধার করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। শুরু থেকে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট মিন্টু বিশ্বাস, সহকারী পুলিশ সুপার দাকোপ সার্কেল মোঃ রাশেদ হাসান এবং থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ সেকেন্দার আলী একটি সুষ্ট নিরপেক্ষ ভোট উপহার দিতে দৃঢ় অঙ্গিকারাবদ্ধ ছিল। ভোটের দিন তাদের সহায়তায় অতিরিক্ত ৫ জন ম্যাজিষ্টেটসহ র‌্যাব, বিজিবি, কোষ্টগার্ড, আনসার ও পুলিশের অতিরিক্ত জনবল মাঠে তৎপর ছিল। সব মিলে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোট গ্রহন হওয়ায় প্রশাসন, প্রতিদ্বন্দি সকল প্রার্থী ও ভোটাররা বেজায় খুশী। অভ্যান্তরীন নাজুক যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বৈরী আবহওয়ার কারনে রাতে উপজেলা কন্ট্রোল রুমে ফলাফল আসে দেরিতে। সব শেষে সোমবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে রিটার্নিং অফিসার ও প্রার্থীদের উপস্থিতিতে নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট মিন্টু বিশ্বাস ফলাফল ঘোষনা করে। ঘোষিত ফলাফলে ১ নং পানখালী ইউপিতে বিজয়ী শেখ সাব্বির আহম্মেদ (আনারস) ৪৬৭৯ ভোট, নিকটতম প্রতিদ্বন্দি শেখ আব্দুল কাদের নৌকা) ৪৬০৩ ভোট, ২ নং দাকোপে বিজয়ী বিনয় কৃষ্ণ রায় (নৌকা) ২৯৩১ নিকটতম প্রতিদ্বন্দি সঞ্জয় কুমার রায় (আনারস) ২২২৫ ভোট, ৩ নং লাউডোবে শেখ যুবরাজ (নৌকা) বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় বিজয়ী, ৪ নং কৈলাশগঞ্জ বিজয়ী মিহির মন্ডল (নৌকা) ৬২৫৩ নিকটতম প্রতিদ্বন্দি দেবব্রত সরকার (আনারস) ৩৪৮৯ ভোট, ৫ নং সুতারখালী বিজয়ী মাসুম আলী ফকির (নৌকা) ৮১৯০ নিকটতম প্রতিদ্বন্দি জিএম আশরাফ হোসেন (অটোরিক্সা)২৪৪৯ ভোট, ৬ নং কামারখোলা বিজয়ী পঞ্চানন মন্ডল (নৌকা) ৫৬৯০ নিকটতম প্রতিদ্বন্দি আব্দুল কাদের সানা (হাতপাখা) ১৯৫৮ ভোট, ৭ নং তিলডাঙ্গা বিজয়ী জালাল উদ্দিন গাজী (আনারস) ৬১৪০ নিকটতম প্রতিদ্বন্দি রনজিত কুমার মন্ডল (নৌকা) ৪৭০৯ ভোট, ৮ নং বাজুয়া বিজয়ী মানস কুমার রায় (নৌকা) ৬৩১৩ নিকটতম প্রতিদ্বন্দি দেবপ্রসাদ গাইন (আনারস) ৪০৪৬ ভোট এবং ৯ নং বানিশান্তা ইউনিয়নে বিজয়ী সুদেব কুমার রায় (নৌকা) ৪৫৬০ নিকটতম প্রতিদ্বন্দি সুধাংশু কুমার বৈদ্য পেয়েছেন ২৯৯৯ ভোট।