ফুলবাড়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি নানা সমস্যায় জর্জরিত

প্রকাশঃ ২০১৭-১১-২০ - ১৪:৫৬

মেহেদী হাসান উজ্জল, (ফুলবাড়ী) দিনাজপুর : দিনাজপুরে ফুলবাড়ী উপজেলার পৌর শহরের ফুলবাড়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি নানা সমস্যায় জর্জরিত। দীর্ঘ ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি ।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি পৌর শহরের মেইন সড়কের পাশে ১৯৬৬ সালে স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে কোন উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। ফলে নানা সমস্যা নিয়ে বিদ্যালয়টি পরিচালনা হয়ে আসছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারী ভাবে ভবন বরাদ্দ হলেও বিদ্যালয়টির দিকে কেউ ফিরে তাকায়নি। এমনটাই অভিযোগ করেন ঐ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি ও সচেতন মহল ।

পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টিতে সর্বমোট ক্লাস রুম ১৩টি এর মধ্যে ০৫টি ছাদ পেটানো পুরাতন ঘর এবং বাকি ০৮টি টিনসেড ঘর রয়েছে। বিদ্যালয়ে মোট ৪৬৯ জন ছাত্রী রয়েছে। ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মোট ২৫ জন শিক্ষক/কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। বিদ্যালয়টিতে লেখা পড়ায় অনেক ভালো ফলাফল রয়েছে ছাত্রীদের। ২০১৬ সালের এস,এস,সি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৬৫.৮৫% ও ভোকেশনালে ৭৩.৪৭%, ২০১৭ সালের এস,এস,সি তে ৭৮.৭৯% এবং ভোকেশনালে ৮৮.৪৬% ছিল।

ফুলবাড়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি তৎকালীন সময় ৫ নভেম্বর ১৯৭৯ সালে সরকারী করণ হওয়ার কথা থাকলেও বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষিকা জেবুন্নেছা’র ব্যাক্তিগত সার্থের কারণে সরকারী করণ হয়নি। তিনি নিজের স্বার্থ দেখতে গিয়ে বিদ্যালয়টিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন এমন অভিযোগ অনেকেরই।

ঐ শিক্ষিকা অবসর নেওয়া পর বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটি হাত বদল হয়ে নতুন কমিটি গঠন হয়। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নতুন সভাপতি হিসেবে বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোঃ আতাউর রহমান মিল্টন দায়িত্ব গ্রহন করেন।

এর পর তিনি বিদ্যালয়টি শক্ত হাতে পরিচালনা করছেন। বর্তমানে তার সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের টিনসেড ঘরগুলি কিছুটা সংস্কার করা হয়েছে। বর্তমানে পূর্বের ন্যায় বিদ্যালয়টির ঐতিহ্য ফিরিয়ে এনেছেন তিনি।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বিশিষ্ট সমাজসেবক মোঃ আতাউর রহমান মিল্টন জানান, বিদ্যালয়টি যখন ধ্বংসের পথে যাচ্ছিল, ঠিক সেই সময় সকলের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি আজ পুর্বের ন্যায় দাঁড় করানো হয়েছে। এই বিদ্যালয়ে আমি থাকি আর না থাকি, সকলকে বিদ্যালয়ের উন্নয়নে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

অপর দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাশেম জানান, আমি এই বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর কমিটির সভাপতি মিল্টন ভাই এর সহযোগিতায় ক্লাস রুমগুলি কিছুটা ভালো করেছি, তবুও ক্লাস রুমগুলিতে বর্তমান ক্লাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ভবনের অভাবে ভাঙ্গাচুরা ঘরগুলিতে জর্জরিত অবস্থায় ছাত্রীদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের জন্য বিঙ্গানাগার নেই, যথেষ্ট পরিমান খেলার সামগ্রী নেই, সেমিনার রুমনেই,ছাত্রী সংখা অনুযায়ী পর্যাপ্ত বসার আসন নেই এবং কম্পউটার ল্যাব নেই ।

দীর্ঘ ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও এই বিদ্যালয়ে সরকারী ভাবে একটি ভবনও কেউ বরাদ্দ দেয়নি। বহুতলা একটি ভবন দেওয়া হলে ছাত্রীদের কষ্ট লাঘব হবে,তারা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে, অপরদিকে ফুলবাড়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি ফিরে পাবে তার ঐতিহ্যকে।

এ ব্যাপারে ফুলবাড়ীর সচেতন মহল, বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল ও সুধিজন,অভিবাবকগন,শিক্ষা মন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।