বিনা চাষে রসুন ও খেসাড়ী আবাদে বটিয়াঘাটার কৃষকরা

প্রকাশঃ ২০১৭-১০-২১ - ২৩:২০

খুলনা : ফসল ফলাতে হলে চাষ করতে হবে, এটিই নিয়ম। তবে এ প্রচলিত নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটিয়েছে বটিয়াঘাটার কৃষকরা। তারা বিনা চাষে রসুন ও খেসাড়ী আবাদ করে সাফল্য পেয়েছে। ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকগণ এদিকেই ঝুকছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রোপা আমন ধান কাটার দিন পনের আগে জমিতে খেসাড়ীর বীজ বপন করতে হয়। ধান পরিপক্ক হলে কেটে নিয়ে যাওয়ার পর খেসাড়ী গাছ নিজের মত করেই বাড়তে থাকে। এক্ষেত্রে ধান কাটার সময় ধানের গোছ একটু উপর থেকে কাটতে হয়। এতে সার বা কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। বীজ বপনের প্রায় তিন মাস পর খেসাড়ী কাটার উপযুক্ত হয়। অন্যদিকে ধান কাটার পর পরই জমিতে রসুনের বীজ রোপন করতে হয়। এক্ষেত্রেও চাষের কোন প্রয়োজন হয় না। প্রায় চার মাস পর রসুন তোলা সম্ভব হয়। হরিনটানা গ্রামের কৃষক সরোয়ার হোসেন বলেন, আগে ধানের পর তিলের চাষ করতাম। এতে চাষের যেমন প্রয়োজন হতো তেমনী ফসল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকতো। কয়েকবার আমার জমির তিল বৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। গত তিন বছর ধরে উপজেলা কৃষি অফিসের জীবন দা এর পরামর্শে খেসাড়ী চাষ করছি। এতে খরচ নেই বললেই চলে, লাভও অনেক ভালো। শুড়িখালি গ্রামের কৃষক আকবর আলী বলেন, আগে আমন ধান কাটার পর জমি ৩-৪ মাস অব্যবহৃত থাকতো। এখন ওই জমিতে আমরা রসুনের আবাদ করি। জমির সঠিক ব্যবহার হচ্ছে, আর আমাদের কর্মহীনভাবে বসে থাকতে হচ্ছে না। উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জীবানন্দ রায় বলেন, বিনা চাষে রসুন ও খেসাড়ী আবাদের মাধ্যমে সাময়িক পতিত জমি ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। এতে কৃষকের খরচ কম হচ্ছে এবং যে জমিতে কোন উৎপাদন ছিল না সেই জমি থেকে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুবায়েত আরা জানান, পদ্ধতিটির ব্যবহারে ফসলের নীবিড়তা বাড়ছে, কৃষক লাভবান হচ্ছে এবং স্বল্প সময়ে একাধিক ফসল উৎপাদিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচীর আওতায় কৃষকরা এ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। উপজেলাব্যাপী এর সম্প্রসারণ চলছে।