বেনাপোল সীমান্তের সাড়ে ৮ কিমি ‘অপরাধমুক্ত’ ঘোষণা

প্রকাশঃ ২০১৮-০৩-০৯ - ২০:৪৫

যশোর: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ৮ দশমিক ৩ কিলোমিটার এলাকাকে প্রথমবারের মতো ‘ক্রাইম ফ্রি’ বা ‘অপরাধমুক্ত’ ঘোষণা করা হয়েছে।

যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল সীমান্তের বিপরীতে ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁও সীমান্তে ৬৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কাল্যানী বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ উদ্বোধন করা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শুক্রবার দুপুর ১টায় বাংলাদেশের পক্ষে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন, যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, যশোর জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন ভারতে গমন করেছেন।

এছাড়াও প্রতিনিধিদলে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জু, বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটনসহ বিজিবির অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বেনাপোল ইমিগ্রেশন হয়ে ভারতে গমন করেন। প্রতিনিধি দলটি বেনাপোল চেকপোস্টে পৌঁছালে বিএসএফ প্রতিনিধিদল তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

প্রকাশ থাকে, ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন সীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধের কৌশল হিসেবে সীমান্তের অপরাধপ্রবণ এলাকা ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ ঘোষণার প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী কে কে শর্মা ওই প্রস্তাবের প্রশংসা করেন এবং ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় উভয় দেশের সম্মতিতে বাংলাদেশের যশোর সীমান্তের পুটখালী ও দৌলতপুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এবং বিপরীত দিকে ভারতের কাল্যানী ও গুনারমঠ বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকার (বর্ডার পিলার নম্বর ১৭/১৪৩-আর থেকে ১৭/১৮১-আর পর্যন্ত) মোট ৮ দশমিক ৩ কিলোমিটার সীমান্ত পরীক্ষামূলকভাবে ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ ঘোষণার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।

বিজিবি ও বিএসএফের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা, পারস্পরিক সহযোগিতা ও উদ্যোগের ফলে ওই সীমান্ত এলাকা ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ হিসেবে ঘোষণা করা সম্ভব হয়েছে।

‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ ঘোষিত সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে কার্যকরভাবে অপরাধ প্রতিরোধের লক্ষ্যে বিজিবির উদ্যোগে ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রকারের বর্ডার সার্ভেইল্যান্স ডিভাইস যেমন-ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা, সার্চলাইট, থার্মাল ইমেজার ইত্যাদি স্থাপন করা হয়েছে। একইসাথে বিজিবির উদ্যোগে সীমান্তে অপরাধ প্রতিরোধে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।

‘ক্রাইম ফ্রি জোন’-এর মধ্যে আন্তঃসীমান্ত অপরাধ যেমন- চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার, মানবপাচার, মাদক, অস্ত্র ও বিস্ফোরক পাচার এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড যেন সংঘটিত না হয়, সে লক্ষ্যে বিজিবি ও বিএসএফ পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি বলবৎ রাখবে।

এছাড়া নিজ নিজ দেশের স্থানীয় প্রশাসন এবং সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণের সহযোগিতায় সীমান্ত অপরাধে জড়িতদের অপরাধমূলক কর্মকান্ড থেকে ফিরিয়ে এনে কর্মসংস্থানের যথাসাধ্য ব্যবস্থা করা হবে। পর্যায়ক্রমে সীমান্তের অন্যান্য এলাকায় ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ ঘোষণার লক্ষ্যে বিজিবি ও বিএসএফ সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।