ভবদহের আমডাঙ্গা খাল খনন কাজের উদ্বোধন

প্রকাশঃ ২০১৮-০১-২৭ - ১৬:০২

অভয়নগর (যশোর) সংবাদদাতা : দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর যশোরের অভয়নগরে ভবদহের আামডাঙ্গা খাল খনন কাজের উদ্বোধন হয়েছে। শনিবার সকালে এ খনন কাজের উদ্বোধন করেন অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র এনামূল হক বাবুল। এলাকাবাসীকে জলাবদ্ধমুক্ত করতে শুক্রবার সকালে স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করে খাল চওড়া করে ভৈরব নদের সাথে সংযুক্ত করতে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র এনামূল হক বাবুল এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক মোল্যা নিজেদের ৬ বিঘা জমি দান করেন।
খনন কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান নূরুল হক মোল্যা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক মোল্যা, সুন্দলী ইউপি চেয়াম্যান বিকাশ রায় কপিল, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রিজিবুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি পৌর কাউন্সিলর আব্দুর রউফ মোল্যা, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক রওশন কবীর টুটুল, খনন কমিটর নেতা বিকাশ রায়, শরীফ গাজী, ইকবাল হোসেন সহ গ্রামবাসী।
এ ব্যাপারে জমিদাতা অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র এনামূল হক বাবুল বলেন, ভবদহবাসীর অভিসাপ জলাবদ্ধতা। এলাকাবাসীর কথা চিন্তা করে জলাবদ্ধতার অবসান ঘটাতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সোনার বাংলা গঠনে ৬ বিঘা জমি বিনামূল্যে দিয়েছি।
স্থানীয় সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইকবাল হোসেন জানান, উপজেলার সুন্দলী, চলিশিয়া ও মনিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়ন সহ ২৯ গ্রামবাসী এ জমি দানের ফলে জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তি পাবে। ৫১ সদস্য বিশিষ্ট একটি খাল কাটা কমিটি করেছি। ওই কমিটির নের্তৃত্বে খালের নকশা করা জমির মালিকদের কাছে যাই। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ৩ হাজার ৬শ’ ৮৫ ফুট ও ২০ ফুট প্রস্থেও খাল খননে স্বেচ্ছাশ্রমে এলাকার তিন শতাধিক লোক কাজ করছে। সাথে রয়েছেন জমিদাতা দু’জন।
জানা গেছে, ২০০৫ সালে এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়ে তৎকালিন চারদলীয় ঐক্য জোটের স্থানীয় সংসদ সদস্য এম এম আমিন উদ্দিন ভৈরব নদ থেকে আমডাঙ্গা বিল পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সরু খাল খনন করেন। কিন্তু খালে পানি প্রবাহে বাধা হয়ে দাড়ায় সরু খাল, রেল ও সড়কের ওপর দু’টি কালভার্ট। ২০০৬ সালে আবার জলাবদ্ধতা দেখা দিলে জনগন ওই কালভার্ট দুইটি ভেঙ্গে চওড়া করার দাবিতে কঠোর আন্দোলনগড়ে তোলেন। যার প্রেক্ষিতে রেল ও সড়ক দু’টির উপযুক্ত স্থানে ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু আমডাঙ্গা থেকে এক কিলোমিটার দুরত্বে রাজাপুর বিলের মধ্যে প্রবাহমান রাজাপুর খালের সাথে সংযোগ না থকায় বিলের পানি নিস্কাশন পূণরায় বাঁধা হয়ে দাড়ায়। ২০০৮ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড আমডাঙ্গা খালটি রাজাপুর খালের সাথে সংযোগ দেওয়ার জন্য জমি অধিগ্রহণের নোটিশ দেয়। এ সময়ে জমির মালিকরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন খালটি তিন কিলোমিটা ঘুরে খনন করা হবে। তখন জনগন খালটি সোজা কওে নির্মাণের আন্দোলন শুরু করে। জনগনের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বন্ধ হয়ে যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওই প্রকল্প। দুই জমিদাতা আমডাঙ্গা খাল নিয়ে রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে নিজ জমি দান করলে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে খনন কাজ শুরু করে।