ভারতের মণিপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত ৪০

প্রকাশঃ ২০২৩-০৫-২৯ - ১৮:৫৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাতিগত সংঘাতের মধ্যে থাকা ভারতের মণিপুর রাজ্যে পুলিশের কমান্ডোদের গুলিতে ৪০ জন নিহত হয়েছে। রবিবার জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি আরও জানিয়েছে, রোববার মণিপুরের বেশ কয়েকটি এলাকায় ৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অভিযান চালানো হয়।

মুখ্যমন্ত্রী রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, তারা খবর পেয়েছেন যে ৪০ সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, তারা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে এম-১৬ ও একে-৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেল এবং স্নাইপার বন্দুক ব্যবহার করছে। তারা অনেক গ্রামে এসে বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। আমরা সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় তাদের বিরুদ্ধে খুব কঠিন পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছি। আমরা প্রায় ৪০ জন সন্ত্রাসীকে গুলি করে হত্যা করার খবর পেয়েছি।

সন্ত্রাসীরা নিরস্ত্র বেসামরিকদের ওপর গুলি চালিয়েছে উলে­খ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মণিপুরকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টারত সশস্ত্র সন্ত্রাসী এবং কেন্দ্রের সহায়তায় রাজ্য সরকারের মধ্যে লড়াই চলছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, গত শনিবার (২৭ মে) রাত ২টার দিকে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা একযোগে ইম্ফল উপত্যকায় এবং তার আশেপাশের ৫টি এলাকায় আক্রমণ করেছে।
এলাকাগুলো হলো সেকমাই, সুগনু, কুম্বি, ফায়েং ও সেরু। আরও অনেক এলাকায় বন্দুকযুদ্ধ চলছে এবং রাস্তায় মরদেহ পড়ে থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
একটি সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে, সেকমাইয়ে বন্দুকযুদ্ধ শেষ হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি সূত্রটি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, গত ২ দিনে ইম্ফল উপত্যকার উপকণ্ঠে বেসামরিকদের ওপর সহিংস আক্রমণের বৃদ্ধি সুপরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে তার কাছে।
২৫টিরও বেশি কুকি গোষ্ঠী কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় ‘সাসপেনশন অফ অপারেশনস (এসওও)’ চুক্তি সই করেছে। এসওও নিয়মের অধীনে, তাদের সরকার নির্ধারিত শিবিরে থাকতে হবে এবং অস্ত্র নামিয়ে রাখতে হবে।
আজ সোমবার (২৯ মে) মণিপুর সফরে যাচ্ছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি মেইতেই ও কুকি উভয় জনগোষ্ঠীকেই শান্তি বজায় রাখার আহŸান জানিয়েছেন। সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডেও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে শনিবার ২ দিনের সফরে মণিপুর পৌঁছান।
অনেকদিন ধরে মণিপুরের সমতলের বাসিন্দা মেইতেই স¤প্রদায়ের সঙ্গে কুকি এবং নাগা জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর বিরোধ চলে আসছে। তফসিলি উপজাতিদের তালিকাভুক্ত হওয়ার বিষয়টি মেইতেই স¤প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। স¤প্রতি হাইকোর্ট মেইতেই স¤প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিভুক্তদের তালিকায় আনা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন।
হাইকোর্টের এই নির্দেশের প্রতিবাদে চূড়াচাঁদপুর জেলার তোরবাঙে অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন মণিপুর (এটিএসইউএম) আদিবাসী সংহতি পদযাত্রার ডাক দেয়। সহিংসতা শুরু হয় এখান থেকেই, যা রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। ৩ মে থেকে শুরু হওয়া এ সংঘাতে মণিপুর ২৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে ইন্টারনেট বিহীন অবস্থায় আছে।