ভোলায় নাসরিন ট্রাজেডির ১৪ তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্মরণসভা 

প্রকাশঃ ২০১৭-০৭-১০ - ১৯:২৭

এম শরীফ আহমেদ, ভোলাঃ ভোলার লালমোহনে মিডিয়া ক্লাবের উদ্যোগে ২০০৩ সালের ঢাকা থেকে লালমোহনগামী এমভি নাসরিন-১ লঞ্চ ডুবিতে নিহত ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত  হয়েছে। সোমবার সকাল ১০ টায় লালমোহন উপজেলা পরিষদ হলরুমে “নিরাপদ নৌপথ চাই, ভুলি নাই ২০০৩ সালের ৮ জুলাই” শীর্ষক স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের শুভ উদ্বোধন করেন লালমোহন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন আহমেদ। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শামছুল আরিফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন লালমোহন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক কবি প্রভাষক রিপন শান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন লালমোহন মিডিয়া ক্লাবের সম্পাদক সাংবাদিক ফয়েজ ফ্যাশন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বজলুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফখরুল আলম হাওলাদার, ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশার সেলিম, মোঃ শাহজাহান মিয়া। আলোচনায় অংশগ্রহন করেন, লালমোহন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক আলী আহম্দ বেপারী, লালমোহন প্রেসক্লাব সভাপতি আব্দুস সাত্তার ও সম্পাদক মোঃ জসিম জনি, লালমোহন রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোঃ আমজাদ হোসেন, সাংবাদিক এনামুল হক রিংকু, সিরাজ মাসুদ, নুরুল আমিনসহ নাসরিন দুর্ঘটনায় স্বজন হারানো পরিবারের সদস্যরা।

উল্লেখ্য, গত  ৮ জুলাই নাসরিন লঞ্চ ট্রাজেডির ১৪ তম বাষির্কী পূর্ন হয়েছিল। বাংলাদেশের নৌ দূর্ঘটনার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনার স্মৃতি বিজড়িত মর্মান্তিক দিন। ২০০৩ সালের এই দিনে ঢাকা থেকে লালমোহনগামী এমভি নাসরিন-১ লঞ্চটি ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিন গুন বেশী যাত্রী ও মালামাল নিয়ে চাঁদপুরের মেঘনা-ডাকাতিয়ার রাক্ষুসী মোহনায় ঘূর্ণায়মান স্রোতের কবলে পড়ে নদীর অতলগর্ভে তলিয়ে যায়। এতে প্রাণহানী ঘটে ৯ শতাধিক যাত্রীর। প্রিয়জনকে হারিয়ে বছরব্যাপী শোকের মাতম করে লালমোহন-তজুমদ্দিন ও চরফ্যাসনসহ দক্ষিন ভোলার আপামর মানুষ। চাঁদপুর থেকে হতভাগা অগণিত মানুষের লাশ ভেসে গেছে বঙ্গোপসাগরে। মাছের পেটে নিহত মানুষের মাংসের অস্তিত্ব পাওয়া যাওয়ায় ওই বছর ভোলাবাসী নদীর মাছ খাওয়া বন্ধ করে দেয়। কুকুরে খেয়েছে অনেক মৃত দেহ। বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের চরে শিশুর লাশের কুকুরে খাওয়া ছবি ছাপা হয়েছে দেশের শীর্ষ স্থানীয় সকল পত্র-পত্রিকায়। জাতীয় সংসদে কেবল শোক প্রস্তাব পাশ করেই দায়িত্ব শেষ করেছে সে সময়ের জোট সরকার। জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী তার দায়িত্ব শেষ করেছেন নৌ পরিবহনমন্ত্রীকে তলব করে। এসময় সবচেয়ে নির্মম আচারণ করেছেন তৎকালীন নৌ পরিবহনমন্ত্রী স্বয়ং। অদ্ভুত সব কথা বার্তা বলে তিনি দেশের মানুষের মনে কষ্ট দিয়েছেন। দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছেন সপ্তাহখানেক পর।  টাইটানিক ট্রাজেডির পড়ে পৃথিবীর নৌ দুর্ঘটনার ইতিহাসে ২য় বৃহত্তম এই লঞ্চ ডুবির ঘটনায় যেখানে কানাডা ও মার্কিন সরকার শোক প্রকাশ করেছে, সেখানে আমাদের  তৎকালীন জোট সরকারের উদাসীনতা প্রশ্নবোধক চিহ্নের জন্ম দিয়েছিল।