মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ খুলনাবাসী

প্রকাশঃ ২০২১-০৩-১২ - ১৭:১৪

ইউনিক প্রতিনিধি : জীবনে খুলনায় এত মশা কখনও দেখিনি। সর্বত্রই অসহনীয় মশার উপদ্রব। বৃহস্পতিবার আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন সোনাডাঙ্গা গ্রামীণ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, বহুতল ভবনেও মশার যন্ত্রণায় দরজা জানালা খোলা যায় না। শীত যেতে না যেতেই মশার উপদ্রব বেড়েছে। মশার এই যন্ত্রণায় রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। ইকবালনগর এলাকার বাসিন্দা হোসেন বলেন, প্রায় মাসখানেক ধরে নগরজুড়ে মশা রাজত্ব বিস্তার করছে। রাতে তো বটেই দিনেও মশার যন্ত্রণায় টেকা দায় হয়ে পড়েছে। দিনের বেলাও মশার উপদ্রব থাকে, বিকেলে তা বেড়ে যায় বহুগুণ। ফগার মেশিন দিয়ে মশক নিধন অভিযানের (মশার ওষুধ) পরও কোনো কাজ হচ্ছে না। ওষুধ পরিবর্তন করা দরকার। ভুক্তভোগী নগরবাসী জানান, মশা তাড়ানোর জন্য কয়েল ও স্প্রে দিয়েও তাড়ানো যায় না। এত পরিমাণ মশা হয়। কেউ কেউ আক্ষেপ করে বলছেন, অকার্যকর হয়ে পড়েছে ওষুধ। মশা ওষুধপ্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। মশা মারতে হলে এখন নতুন কার্যকর ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। নগরবাসী মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) কাছে জোরালো উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। যদিও সিটি কর্পোরেশন বলছে, বর্তমানে মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করায় কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিনই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মশার ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। কর্পোরেশনের কঞ্জারভেন্সি শাখা সূত্রে জানা গেছে, কেসিসি তিনটি ধাপে কার্যক্রম মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রথম ধাপে উড়ন্ত মশক নিধনে কেসিসি ৩১টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৪২২ লিটার অ্যাডাল্ট্রিসাইড ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে করছে। দ্বিতীয় ধাপে প্রতি ওয়ার্ডে প্রতিদিন সকালে ৫০ লিটার পানিতে ৫০ এমএল পরিমাণ লার্ভিসাইড মিশিয়ে স্প্রে করা হচ্ছে। তৃতীয় ধাপে মশার ডিম নষ্ট করতে চাহিদা মতো লাইট ডিজেল (কালো তেল) স্প্রে করা হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, মহানগরীর বেশিরভাগ এলাকায় ড্রেন ও সড়ক সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য চলমান ড্রেন সংস্কারের কারণে বন্ধ রয়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ ড্রেন। এ কারণে সড়কের আশপাশে পড়ে থাকছে আর্বজনার স্তুপ। এতে সহজেই বিস্তার লাভ করছে মশা। ফলে বাসাবাড়ি, দোকানপাট, অফিস-আদালত সর্বত্রই মশার উপদ্রব বেড়েছে। রাতে তো বটেই দিনেও মশার ভনভনানি শুনতে হচ্ছে। সিমেন্ট্রি রোড, খান জাহান আলী রোড, বাগমারা মেইর রোড, কেডিএ এভিনিউ, সার ইকবাল রোড, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় পঙ্গপালের মতো মশা উড়তে দেখা যায়। বিশেষ করে নিম্নআয়ের মানুষের বসবাসের স্থান ঘিঞ্জি এলাকার বস্তিগুলোতে। কেসিসির সহকারী কঞ্জারভেন্সি অফিসার নূরুন্নাহার এ্যানি বলেন, ৫ মার্চ থেকে লাইট ডিজেল স্প্রে শুরু হয়েছে। যত দিন পর্যন্ত মশা পুরোদমে দমন না হবে তত দিন এ স্প্রে চলবে। একটি মেশিন দিয়ে এখন তিন বার স্প্রে করা হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডেই প্রতিদিন মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।