মোংলায় রাতের অন্ধকারে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জমি দখল

প্রকাশঃ ২০২৩-০৩-১১ - ১১:৫২

 স্থানীয় ইউপি সদস্যের মদদে আসামিরা জামিন

প্রাকাশ্যে বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি

 

মোংলা প্রতিনিধি : মোংলায় জোর পূর্বক বাড়ি ও জমি দখলের মামলা দেয়ায় সন্ত্রাসীদের ভয়ে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে অসহায় দিন মজুর পরিবারের সদস্যরা। স্থানীয় এক ইউপি মেম্বারের সহায়তায় এক দল সন্ত্রাসী দিন মজুর পরিবারকে ঘরে অস্ত্রের মুখে আটকে রেখে জমি ও বসতবাড়ি জোর পূর্বক দখল করে নেয় মিকাইল ফরাজী সহ তার সন্ত্রাসীরা বলে অভিযোগ করে নির্যাতনের স্বীকার এ অসহায় পরিবারটি। এসময় রাতের অন্ধকারে তারা সন্ত্রাসী তান্ডব চালিয়ে ঘরের মালামাল ভাংচুর ও গাছপালা কেটে খালে ভাসিয়ে দেয়া হয় বলে থানার মামলা সুত্রে জানা যায়। এসময় বাঁধা দিতে গেলে অসহায় এ দিন মজুরের নারী সহ পরিবারের ৫ সদস্যদের মারধরও করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হওয়ায় জামিনে এসে সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্য হুমকিতে নিরাপত্তা হিনতায় ভুগছে দিন মজুর এ পরিবারের সদস্যরা।

থানার মামলা সুত্রে ও প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানায়, মজিদ সিকদার নামের এক অসহায় ব্যাক্তি খালে মাছ ধরে ৫ সদস্যের পরিবার নিয়ে বহু কস্টে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। ঘর বাড়ি বা মাথা গোজার কোন ঠাই না থাকায় হলদিবুনিয়া গ্রামের পঙ্গুর মোড় এলাকায় ১৩ শতক জমি ক্রয় করে বসবাস করছেন ওই দিনমজুর। কিন্ত ওই এলাকার সন্ত্রাসী মিকাইল ফরাজী, লতিফ ফরাজী সহ তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী বহু দিন থেকে অসহায় পরিবারটিকে মারপিট করা সহ ঘর বাড়ি ও জমিটুকু জোরপুর্বক দখল করার জন্য বিভিন্ন রকম পায়তারা ও ষড়যন্ত্র করে আসছিল। তারই জের ধরে গত বছরের ৩০ জুলাই রাত্রে সন্ত্রাসীরা জমির সিমানায় অনাধিকার প্রবেশ করে ঘরের মালামাল ও জমির সিমানা প্রাচিরের ঘেরাবেড়া ভাংচুর সহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় অর্ধশতাধিক গাছ কেটে ফেলে খালে ভাষিয়ে দেয় এবং জমিতে নেট জাল দিয়ে জমি জোর পুর্বক দখল করে। এসময় তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখলেও তার পুত্রবধু পারভিন বেগম ও স্ত্রী বিজলী বেগম বাধা দিলে তাদের চুলের মুঠি ধরে টেনে হেছড়ে ঘর থেকে বাহিরে নিয়ে মারধর শ্লিলতাহানী করে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়। এসময় তাদের হাতে থাকা লোহার রড, দাও, লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়ি ঘর ভাংচুর সহ সন্ত্রাসী তান্ডব চালায়। তখন আহতদের আত্মচিৎকারে আশ পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে প্রান নাশের হুমকি দিয়ে চলে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ্য করা হয়। এব্যাপারে পারভিন বেগম বাদী হয়ে লতিফ ফরাজীর ছেলে মিকাইল ফরাজী, মৃত অফেজ ফরাজীর ছেলে লতিফ ফরাজী, মৃত মোক্তার ঢালীর ছেলে শুকুর ঢালী, আসকর ফরাজী সহ অজ্ঞত নামা আরো ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে মোংলা থানায় মামলা দায়ের করেণ। এ ঘটনার পর পরই মোংলা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজাতে পাঠায়। কিন্ত কিছু দিন যেতে না যেতেই আদালত থেকে জামিনে এসে স্থানীয় ইউপি মেম্বারের মদদে পুনরায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুরু করে সন্ত্রাসী এ সকল আসামীরা। প্রকাশ্যে হুমকিও দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেণ অসহায় মজিদ সিকদার সহ তার পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি মোংলা থানা পুলিশকেও অবিহিত করা হয়েছে। বহুদিন থেকে সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্যে হুমকির ভয়ে অসহায় ওই দিন মজুর পারিবারের সদস্যরা প্রান বাঁচাতে অন্যাত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে জানায় এলাকার প্রত্যাক্ষদর্শীরা। এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চায় তারা।

চিলা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আকবার হোসেন বলেন, মিকাইল ফরাজী সহ তার লোকজন ওই দিন মজুরের জমিটুকু দখল করছে বলে আমিও শুনেছি। তবে অসহায় এ পরিবারটি জমি সঠিক কিন্ত যারা দখল করছে তারা ওই পরিবারটির উপর অন্যায় ভাবে জুলুম করেছে তবে সুন্দরবন ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ইস্রাফিল মেম্বার আমার ইউনিয়নে এসে এরকম কর্মকান্ড করা ঠিক হয়নী।

সুন্দরবন ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য ইস্রাফিল বলেন, ঘটনাটি সুন্দরবন ও চিলা ইউনিয়নের সিমানার পাশাপাশী হওয়ায় আমাকে ঘটনার সময় ডাকা হয়েছিল কিন্ত আমি এর সাথে জড়িত নয়।

মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম জানান, চিলা ইউনিয়নের হলদিবুনিয়া পঙ্গুরমোড় এলাকায় একটি জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দন্ধ চলে আসছিল। এ নিয়ে জমি দখল, ভাংচুর, মারধর ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ঘটনায় নিয়ে থানায় মামলাও হয়েছে এবং আসামীদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দও করা হয়েছে। পুনরায় যদি বাদী পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি করার চেষ্টা করা হয়, তবে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করবে বলে জানায় থানার এ কর্মকর্তা।