মোল্লাহাটে নির্যাতন সইতে না পেরে গৃহকর্তৃর আত্মহত্যা

প্রকাশঃ ২০২০-০৪-১২ - ১৯:৪৫

মোল্লাহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : মোল্লাহাটে নিজের পুত্র-পুত্রবধূ ও স্বামীর সম্মিলিত সীমাহীন শারিরীক ও মানষিক নির্যাতন সইতে না পেরে অঞ্জু রানী (৫৫) নামে এক মহিলা আত্মহত্যা করেছে বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার সকালে উপজেলার আটজুড়ি গ্রামে স্বামী অনন্ত কুমার মন্ডলের বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় অঞ্জু রানীর বড় পুত্র অপূর্ব কিশোর মন্ডল ও তার স্ত্রী স্কুল শিক্ষক রমা মিত্র বিচার দাবীতে জানান, অনন্ত কুমার মন্ডল ও অঞ্জু রানী দম্পতির দুই পুত্র সন্তান অপূর্ব কিশোর মন্ডল (বড়) ও অমিতাভ মন্ডল (ছোট) রয়েছে। বড় পুত্র ও পুত্রবধূ (অভিযোগকারী) চাকুরীর সুবাদে পিরোজপুরের নাজিরপুরে থাকেন। এদিকে তাদের বাবা, মা, ছোট ভাই ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী পলি বাড়িতে থাকেন। বাবার স্বভাব ভালো না, তবে বাবা মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পান, ওই ভাতার টাকার লোভে ছোট ভাই এবং তার স্ত্রী পলি (২৫) বাবার সকল খারাপ কিছুর সাথে একমত হয়ে মাকে অত্যাচার করে। বাবার খারাপ কিছুর প্রতিবাদ করলে মা’কে ওই তিনজনে মিলে মারপিট করে। মাকে যখন-তখন মারপিট করা তাদের রুটিনে রূপ নেয়। বিশেষ করে পুত্রবধূ পলি বেশী মারপিট করতো। জঘণ্য ওই নির্যাতন সইতে না পেরে একাধিকবার তাদের কাছে (বড় ছেলে) পিরোজপুর গেছেন। তারা তখন মাকে রেখে দিতে চেয়েছেন। কিন্তু সংসারের মায়ায় আবার চলে আসেন বাড়িতে। শত অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেও বাবাকে পাপমুক্ত রাখার চেষ্টা করতেন মা। মা অনেক সহজ-স্বরল ছিলেন বলে কেঁদে ফেলেন বড় পুত্রবধূ রমা মিত্র। ওই দম্পতি আরো জানান, শুক্রবার সন্ধায় মারপিট করায় ওই রাত না খেয়ে কাটে অঞ্জু রানীর। রাত শেষে শনিবার সকালে আবার মারপিট করায় তিনি বেশী অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বলা হয় বিষ (কুরাটর) খেয়েছে। অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হওয়ায় সেখানে আর ওয়াস করা হয়নি। এরপর ফিরিয়ে আনার সময় মৃত্যু হয় বলে শুনেছেন তারা। ওই দম্পতি আরো জানান-মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা পিরোজপুর থেকে বাড়ি এসে দেখেন, লাশ পড়ে আছে, অথচ ঘরে টিভি চালিয়ে সিনেমা দেখছেন ছোট ছেলের বউ পলি। তারা এঘটনার যথাযথ বিচার দাবী করেন।
এবিষয়ে অঞ্জু রানীর স্বামী অনন্ত কুমার মন্ডল বলেন-রাতে ঝগড়া হয়েছিলো, সকালে ৭টারদিকে কুরাটর খেয়েছে, তাৎক্ষণিক তাকে হাসপাতালে নিলে ডাক্তাররা বলে গোপালগঞ্জ নিতে। পরে ওই হাসপাতাল থেকে বের হয়ে অল্প কিছুদুর যেতেই ৮টার দিকে মারা যায়। পরে বাড়ি আনলে গ্রাম্য শত্রুরা বিভিন্ন খোচা-খুচি করছে। পুলিশ লাশ ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট নিয়েছে, ওই খানেই লাশ পোড়ানো হবে এবং ছেলেরা সাথে গেছে।
এবিষয়ে মোল্লাহাট থানা অফিসার ইনচার্জ কাজী গোলাম কবীর বলেন-অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এছাড়া ময়না তদন্তের প্রতিবেদন আসলে তদনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।