রামপালে অতিবর্ষনে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি দিশেহারা মৎস্য চাষিরা

প্রকাশঃ ২০১৭-১০-২২ - ২২:০১

রামপাল (বাগেরহাট) : রামপালে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে মৎস্য চাষিরা। গত ৩ দিন ২০ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত অতিবর্ষন ও জোয়ারের পানিতে ঘেরের বাঁধ ভেঙ্গে পুকুর, খামারের মাছ ও কাঁকড়া ভেসে যাওয়ায় প্রায় ৩৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। রামপাল উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মাছ ও কাঁকড়া ভেসে যাওয়ায় অনেক মৎস্য চাষি সর্বশান্ত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের প্রায় ৪ হাজার ৯ শত ২৫ টি মৎস্য খামার ভেসে গিয়ে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ৮৩ হাজার ৫ শত ৬০ কেজি বাগদা, ৬৬ হাজার কেজি গলদা, ১ লক্ষ ৫৫ হাজার কেজি সাদা মাছ ও ২২ হাজার ২ শত ৫০ কেজি কাঁকড়া ভেসে যায়। যার আনুমানিক মূল্য ১৩ কোটি ৯৯ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকারও বেশি।
১০ ইউনিয়নের মধ্যে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে পেড়িখালী ও গৌরম্ভা বাইনতলা, বাঁশতলী, ভোজপাতিয়া, ইউনিয়নের। এর পূর্বে গত ২৫ জুলাই একইভাবে অতিবৃষ্টিতে ও জোয়ারের প্লাবনে চিংড়ি, সাদামাছ ও কাঁকড়া ভেসে গিয়ে প্রায় ২৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। ওই দপ্তরের এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে গত অর্থ বছরে (২০১৫-১৬) রামপালে ১৫ হাজার ৬ শত ০৭ মেট্রিক টন বাগদা-গলদাসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদন হয়েছিল। যার আনুমানিক মূল্য ধরা হয় ৪ শত ৭৫ কোটি টাকার ও বেশি। বিভিন্ন প্রকারের সাদা মাছ উৎপাদন হয়েছিল, ৮ হাজার ৮ শত ৫৩ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছিল, ১৩২ কোটি ৭৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। শিলা কাঁকড়া উৎপাদন হয়েছিল ৯ শত মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ৫৪ কোটি টাকা। এ বছর উৎপাদন লক্ষমাত্রা বেশি ধরা হলেও সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টি জনিত ক্ষতির কারনে সেই লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে কিনা সে ব্যপারে সংশয় দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ জানান, গত বছর সাদামাছ বাগদা ও কাঁকড়া উৎপাদন করে প্রায় ৪ শত ৭৫ কোটি টাকা আয় হলেও এ বছর দুই দফা অতিবৃষ্টি ও প্লাবনে মাছ ভেসে যাওয়ায় লক্ষমাত্রা অর্জন করা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কুমার পালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ইতিমধ্যে মাঠ পর্যায়ে প্রাথমিকভাবে মৎস্যখাতের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে বাগেরহাট জেলা প্রশাসককে অবহিত করে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। বরাদ্দ পেলেই ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্যখামারীদের মাঝে চাল বিতরণ করা হবে। ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের জন্য ত্রান সহায়তা হিসাবে চালের বরাদ্দ চেয়েছি।