শরণখোলায় নববধু’র আত্নহত্যা

প্রকাশঃ ২০২১-০৪-০২ - ১৮:৫২

শরণখোলা : বিয়ের বছর না ঘুরতেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হলো মাহফুজা আক্তারকে (১৮)। স্বামী ওমরসানী মল্লিকের যৌতুকের চাপ, মারধর আর শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতন সইতে না পেরে শেষ পর্যন্ত গলায় দড়ি দেন ওই নববধু। নিহতের মা মাজেদা বেগম এমন অভিযোগ করেছেন সাংবাদিকদের কাছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে বাগেরহাটের শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়নের বকুলতলা গ্রামে বাবা সালেহ আহম্মদ আকনের বাড়ির ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় দড়ি দেন মাহফুজা। দেখতে পেয়ে পরিবারের লোকেরা সেখান থেকে দ্রুত উদ্ধার করে শরণখোলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্য চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। পরে পুলিশ হাসপাতাল থেকে ওই নববধুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। নিহতের মা মাজেদা বেগম জানান, আট মাস আগে পার্শ্ববর্তী সোনাতলা গ্রামের জাকির মল্লিকের ছেলে ওমরসানী মল্লিকের সাথে বিয়ে দেন মেয়েকে। এর পরই ওমরসানী যৌতুক দাবি করতে থাকে। তার চাহিদা মেটাতে না পারায় মেয়ের ওপর শুরু হয় মারধর। শ্বশুর-শাশুড়িও নির্যাতন করে। এতে বেশ কিছুদিন ধরে তার মেয়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ অবস্থায় গত তিন দিন আগে (২৯মার্চ) মারধর করে মেয়েকে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। শারীরিক ও মানসিক জ্বালাযন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরেই তাদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। স্ত্রীর মরার খবর পেয়েও স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির কেউ দেখতে আসেনি। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি। স্থানীয় বকুলতলা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন খলিল জানান, বিয়ের পর থেকেই স্বামী টাকা-পয়সার জন্য চাপ দিতে থাকে স্ত্রীকে। এনিয়ে স্বামী তাকে বিভিন্ন সময় মারধর করারও অভিযোগ করেন মেয়ের মা-বাবা। শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান জানান, মেয়েটি শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল বলে জানা গেছে। আত্মহত্যার রহস্য উদ্ধারে চেষ্টা চলছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এলে নির্যাতনের বিষয়টিও জানা যাবে। এব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। এব্যাপারে জানতে চাইলে শ্বশুর জাকির মল্লিক নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে জানান, ছেলে কখনোই তার স্ত্রীকে মারধর করেনি। তাছাড়া যৌতুক দাবির অভিযোগও মিথ্যা। তবে, কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা তিনি বলতে পারছেন না।